বাবু, বিবির কেরেস্তানি খোঁয়ারি ভাঙলে নূতন আমোদের খোঁজ পড়বে, এম্নি আশা করে নকশাটি লেকা হচ্চে। অ্যাকন ফেস্টিভ্যালের মরসুম। সম্পাদক বল্লে কলকেতায় অনেককাল পরে একত্র ওল্ড মঙ্ক ও মঙ্কি ক্যাপের শীত পড়েচে। এ সওয়ায় সকলে করোনায় ফাঁকি হওয়া ফুর্তি উদ্ধার কত্তে নেমেচেন। এ বৎসর আবার খ্রীষ্টমাস কলকেতায় কিঞ্চিৎ আগে এসেচে। সান্তাক্লসের অন্য বৎসর হরিণে টানা স্লেজে চড়ে আগমন হয়, এবার বাইকে টানা ইভিএমে চড়ে এয়েচেন। তবে হুতোম তাকে আগেভাগে সাবধান করেচিল, কলকেতায় ভোট মরসুমে লাল রং পল্লে দুপেয়ে ষাঁড়ে তাড়া করে। তাই সে সবুজে সেজে এসেচিল, লাল টুপি জামা ইত্যাদি কাঁধের ঝোলায় ছিল। খ্রীষ্টমাস ইভের আগে ভুলেও বের করেনি। খ্রীষ্টমাসের সকালে কেরেস্তান পাড়ায় দ্যাকা হতে আলিঙ্গনপূর্বক ধন্যবাদ দিলে। বল্লে ‘প্রভো, জোর মান রেকেচ। ভুলে লাল পরে এসে পল্লে ষাঁড়ে ন্যাংটা করে ফেলত দেকচি! এ বৎসর সবুজ ভিন্ন রং দেকলেই কাপড় খুলে নেয়া নূতন মোচ্ছব হয়েচে।’
শাদা দাড়ির লোকেদের নাহক আলিঙ্গনের সাধ কেন হয় বুঝিনে। তবে কিনা ফেস্টিভ্যালে ভাই বেরাদর সনে বিবাদ করা হয় না, তাই কিচু বল্লেম না। শুধোলেম আর সব কেমন? সান্তা বল্লে ‘একানে ষাঁড়ের উপদ্রব, অন্যত্র গোসন্তানে ঢুঁ দিয়ে বেড়াচ্চে। ভায়া, জম্মে ইস্তক দেকচি এফিজি বার্ন করা হয় নেতাদের। তারা আমারই এফিজি বার্ন কচ্ছে। বুড়ো মানুষের ’পরে অ্যাতো রাগ কিসের র্যা? বলি আমি কি ভ্যাক্সিন সাট্টিফিকেটে আমার ছবি ছেপেচি, নাকি পেট্রোলের দাম বাড়িয়েচি?’ সান্তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বল্লেম, তোমার তো কেবল এফিজি বার্ন হচ্চে। যীশুর ঘরদোর বাজাপ্ত হচ্চে। গোসন্তানেরা বেজায় উদার, ধর্মে ধর্মে ভেদ করে না। মসজিদ ভাঙা হচ্চে আর গির্জেতে দাগটি পড়বে না এ বা কি কতা?
নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।
সান্তার সনে পরের নিন্দে কত্তে কত্তে দু পাত্তর নেশা কচ্ছি, শুনি এক বাবু তেনার গার্লফ্রেন্ডটিকে বলচেন, কলকেতার বিউটি দ্যাকো ডার্লিং! ইহুদি বেকারি হতে মোছলমান কারিগরের তোয়ের করা কেক হিঁদু লাইন দিয়ে খরিদ কচ্ছে। নেশা বিলক্ষণ চড়ছিল, তাই হুতোমের মেজাজটি একজামিনের ফল বেরোবার দিন হেডমাস্টারের মতন ছিল। শুধোলেম, বাবু নিজে কোনটি? ছোকরা বল্লে ‘উই ডোন্ট প্র্যাকটিস এনি রিলিজিয়ন।’ কিন্তু হুতোম অমনি রেহাই দেয়ার বান্দা নন। বল্লেম, বাবু কি মায়ের পেটে হয়েচেন নাকি কৈলেস পর্বত হতে আমাদের ধন্য কত্তে ড্রোনে চেপে ল্যান্ড করেচেন? পরিচয় দিতে আজ্ঞা হোক। ছোকরা নাসিকাটি উঁচু করে বল্লে, সে কতা আগে বল্লেই হত, পরিচয় অমনি দিতেম। আমরা কি শিডিউল কাস্ট যে পরিচয় দিতে লজ্জা হবে? কিন্তু ধর্ম শুধোবার আবশ্যক কী? ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। বল্লেম তা বেশ কতা। আজ মাতায় সান্তাবুড়োর টুপি পরেচ, ঈদের দিনে ফেজ পরেছিলে তো বাছা? বাবুটি জবাব দেয়ার জন্যে মুখ খুলতেই মা জননী ‘হোয়াই ওয়েস্ট টাইম অন কনজারভেটিভ বুড়োজ? দেকচ না কেমন ব্যাকডেটেড জামাকাপড়? লেটস গো” বলে মাকালটিকে পোষ্য গর্দভের মতন টানতে প্রস্থান কল্লেন। সান্তা হেসে খুন হয়ে বল্লে ‘মোছলমানের নাম করে বাবুটিকে বেজায় বিপদে ফেল্লে দেকচি।’ হিঁদু বাবু, বিবির মোছলমানের নাম শুনলে বিপদ হয় আর মোছলমানদের মোছলমান নাম হলেই বিপদ হয়। এদানি কেবল নিজের নামে নয়, খোদার নামেও বিপদ হচ্চে। নিত্য তেনার নাম কত্তে গেলে গালমন্দ হজম কত্তে হচ্চে।
দেশটি সেকুলার অথচ কেবল কেরেস্তানদের ফেস্টিভ্যাল হবে এ বা কি কতা? তাই হিঁদুরাও ফেস্টিভ্যাল কত্তে লেগেচে। ফেস্টিভ্যালে বীর সাধু সন্নেসীরা বলেচেন অস্ত্র যোগাড় কত্তে হবে, যুদ্ধ কত্তে হবে, ঠাঁই গুলি চালাতে হবে। মোছলমানে আর কেরেস্তানে দেশটি গিলে ফেল্লে গা। অতেব তাদের নিকেশ কত্তে হবে। কান্ড দেকে বাবুরো বেজায় গোল কচ্ছেন, চোক কপালে তুলে গবর্নমেন্টকে বলচেন ‘এদের এরেস্টো করো।’ শুনে নরক হতে কেরেস্তান সাধু স্ট্যান স্বামী হুতোমকে বল্লে ‘ঢং দেকে আর বাঁচি নে।’
নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:
আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
আমাদের ফেসবুক পেজ লাইক করুন।
টুইটারে আমাদের ফলো করুন।
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যোগ দিন।