এপ্রিলেই তীব্র গরমের মুখে বাংলা। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে অস্বাভাবিক তাপমাত্রার পাশাপাশি কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আপেক্ষিক আর্দ্রতার হারও অস্বাভাবিক কম। শুষ্ক এই গরম গাঙ্গেয় অঞ্চলে প্রায় বিরল। ক্যালেন্ডার বলছে বসন্তকাল শেষ হয়নি, আবহাওয়া বলছে তাপপ্রবাহ চলছে। কলকাতার তাপমাত্রাই ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে। শারদোৎসবে সামান্য বৃষ্টির পর দীর্ঘদিন একফোঁটা বৃষ্টি হয়নি। মাঝে দুদিন হলেও তা অতি সামান্য। কলকাতায় এপ্রিল মাসে কমপক্ষে ৫৮.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা। এই বছরে এখনো এক মিলিমিটারও হয়নি। বিকেলের কালবৈশাখী পয়লা বৈশাখের আনন্দ মাটি করবে কিনা – সেই আশঙ্কা নিয়েই আসত বাংলার নববর্ষ। এই বছরের আতঙ্ক, সকাল থেকেই যা গরম পড়ছে, তাতে আমরা বাড়ির বাইরে বেরোতে পারব কিনা। কালবৈশাখী একেবারেই অতীত হয়ে যাবে কিনা তা বলার সময় এখনো আসেনি। কিন্তু প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চারিদিকে আলোচনার শেষ নেই। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে সে নিয়ে চলে নানা তর্কবিতর্ক, গুরুগম্ভীর ভাষণ, রাজনীতি, কূটনীতি। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও যে পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর তা পণ্ডিতদের অজানা নয়। পারস্পরিক দোষারোপ, নানা ব্যবস্থা গ্রহণের ভণ্ড প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলোচনা সভা, সম্মেলন, মহাসম্মেলন শেষ হয়। কিন্তু পরিবেশ ধ্বংসের কাজ চলে স্বাভাবিক গতিতে। উন্নয়নের নামে, জীবনযাত্রার উন্নতির নামে আমরা এভাবেই পরিবেশ ধ্বংস করে চলেছি। তাপমাত্রার পাশাপাশি আপেক্ষিক আর্দ্রতাও বুঝিয়ে দিচ্ছে – এক আত্মঘাতী উন্নয়নের পথে আমরা চলেছি।
সরকার তথা উন্নয়নের মৌরসি পাট্টা নেওয়া কারিগররা বলতেই পারেন এটা বিশ্বজনীন সমস্যা। কিন্তু বিশ্বজনীন সমস্যা বলে আমরা দায় এড়াতে পারি না। আমাদের চোখের সামনে কমে চলেছে সবুজ এবং জলাভূমি। মাটির নিচের জলস্তর উদ্বেগজনকভাবে নেমে যাচ্ছে, জল দূষিত হচ্ছে। মহানগরী কলকাতাসহ সারা রাজ্যে কখনো রাস্তা চওড়া করতে, কখনো বহুতল নির্মাণ করতে, কখনো পর্যটন শিল্প বা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে চলছে নির্বিচারে পরিবেশ ধ্বংসের কাজ।
নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।
গাছ কাটা বা জলাভূমি বুজিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনের খবর এখন সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত স্থান পায়, কিন্তু সরকার নির্বিকার। উলটে আন্দোলনকারীদের উপর দমননীতি প্রয়োগের ঘটনা বেড়েই চলেছে। উত্তর ২৪ পরগণা জেলার যশোর রোড চওড়া করতে গাছ কাটা নিয়ে দীর্ঘদিন বিতর্ক চলছে। তারই মধ্যে বারাসত-ব্যারাকপুর রোড চওড়া করতে গাছ কাটা শুরু হয়েছে। হুগলী জেলার তারকেশ্বর বা আরামবাগে রাস্তা চওড়া করতে গাছ কাটার বিরুদ্ধে পরিবেশপ্রেমীদের প্রতিবাদের খবরও উঠে আসছে। মহানগরী কলকাতায় নির্বিচারে চলছে গাছ কাটা, সবুজ এবং জলাভূমি ধ্বংস করা। উন্নয়ন, সৌন্দর্যায়নের নামে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নির্বিচারে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। মেট্রো রেলের জন্য টালি নালার সর্বনাশ বহু আগেই করা হয়েছে। এখন সরকার, কর্পোরেশন, পৌরসভা, পঞ্চায়েতের উদ্যোগে খাল, মজে যাওয়া নদী বুজিয়ে রাস্তা হচ্ছে। বেহালার পূর্ব বড়িশা থেকে চড়িয়াল খাল প্রায় কুড়ি কিলোমিটার পথ বেয়ে বজবজের কাছে গঙ্গায় মিশেছে। পূর্ব বড়িশার মতিলাল গুপ্ত রোড থেকে ঠাকুরপুকুর মহাত্মা গান্ধী রোড পর্যন্ত প্রায় পৌনে তিন কিলোমিটার ইতিমধ্যেই বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলন, প্রতিবাদেও তথাকথিত উন্নয়নের ঠিকাদাররা দমবার পাত্র নয়।
উন্নয়ন, সৌন্দর্যায়নের নামে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি নির্বিচারে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। মেট্রো রেলের জন্য টালি নালার সর্বনাশ বহু আগেই করা হয়েছে।
গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চলে আইন লঙ্ঘন করে একের পর এক নির্মাণ কাজ চলছে। কোনোটা বড় বড় কোম্পানি নির্মিত বহুতল, কোনোটা আবার সরকার বা পৌরসভার প্রকল্প। সবই হচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। হয়ত প্রথমে পৌরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র হচ্ছে। তাতে আপত্তি জানালে লোক খেপানো সহজ। তারপরেই পাশে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মাণ কাজ করতে অসুবিধা নেই। পৌরনিগম বা পৌরসভা, রাজ্য সরকার, পোর্ট ট্রাস্ট – একে অপরকে দোষারোপ বা না জানার ভান করতে ব্যস্ত। বন্ধ কারখানার মালিকানায় থাকা জলাভূমি বুজিয়ে দিব্যি গড়ে উঠছে উপনগরী।
বছর ৫-৬ আগে হুগলী জেলার গোঘাটের ভাবাদীঘি সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছিল। আরামবাগ-বিষ্ণুপুর রেলপথ তৈরির সময়ে গোঘাটের এই দীঘি বোজানোর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। বাহান্ন বিঘেরও বেশি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ভাবাদীঘির একাংশ বুজিয়ে রেলপথের পরিকল্পনা হয়। গ্রামবাসীরা, বিশেষত এই দীঘির অংশীদাররা, তীব্র প্রতিবাদ করেন। শাসক দল ও রাজ্য সরকারের আক্রোশের শিকার হন। প্রতিবাদীরা উন্নয়নবিরোধী, রেলপথ হতে বাধা দিচ্ছে ইত্যাদি বলে লোক খেপানোরও চেষ্টা হয়। শাসক দল ও সরকারের সেই চাপের কাছেও প্রতিবাদীরা নত হননি। সরকার পিছু হটেছে। কিন্তু এখনো বিকল্প উদ্যোগ কার্যকরী হয়নি। অথচ এলাকায় গেলেই দেখা যাবে, রেললাইন করতে দীঘি না বোজালেও চলে। দীঘির উপর দিয়ে রেললাইন নিয়ে যাওয়ার খরচই বরং অনেক বেশি। কিন্তু কী কারণে সরকার নাছোড়বান্দা, এর সঙ্গে মাটি ব্যবসায়ী, নির্মাণের বরাত পাওয়া সংস্থার স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে কিনা – তা রহস্যাবৃত। তবে এটা স্পষ্ট, যে সরকার যদি সুষ্ঠুভাবে রেলপথ চাইত, তাহলে এতদিনে সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসত। দীঘিকে বাঁচিয়েই তা করা সম্ভব।
এলাকায় গেলেই দেখা যাবে, রেললাইন করতে দীঘি না বোজালেও চলে। দীঘির উপর দিয়ে রেললাইন নিয়ে যাওয়ার খরচই বরং অনেক বেশি।
পুরুলিয়া জেলায় নানা উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বনভূমি, পাহাড়ের ক্ষতি করা হচ্ছে। অযোধ্যা পাহাড়ে ছটা জলাধার নির্মাণের জন্য বিপুল বনভূমি ধ্বংসের আশঙ্কা। বড় বড় কোম্পানিকে সুযোগ করে দিতে সরকার আসরে নেমেছে। আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ ব্যবসার সুযোগ করে দিতে মুর্শিদাবাদ জেলার আমবাগান নষ্ট করা হচ্ছে। উত্তরে দার্জিলিঙে সেবক-রংপো রেলপথ নির্মাণ চলছে পরিবেশ সংক্রান্ত নিয়মকে তোয়াক্কা না করে। চলছে একের পর এক বাঁধ নির্মাণ। ডুয়ার্স এলাকায় তৈরি হচ্ছে বহুতল, বনভূমি ও জলপথের ক্ষতি করে পর্যটন কেন্দ্র। ভূমিকম্পপ্রবণ এসব এলাকায় বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। যোশীমঠের বিপর্যয় থেকেও এ রাজ্যের উন্নয়নের ঠিকাদাররা শিক্ষা নেয়নি। একই চিত্র রাজ্যের দক্ষিণে সুন্দরবনের। প্রকৃতি ধ্বংস করে চলছে পর্যটন কেন্দ্র। গ্রামসভা, গ্রাম সংসদ, প্রচলিত পঞ্চায়েত আইন, বনাধিকার আইন – সরকার কোনোকিছুর তোয়াক্কা করছে না। আপত্তি বা প্রতিবাদ করলেই শাসক দল ও প্রশাসনের আক্রমণ নেমে আসে।
আরো পড়ুন যোশীমঠ বিপর্যয় কেবল পরিবেশ সংকট নয়
পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে চলছে প্রকৃতি ধ্বংসের কাজ। জলাভূমি ধ্বংস করে চলছে জমি বিক্রি বা বহুতল নির্মাণ। নির্বিচারে গাছ কেটে আইন ফাঁকি দিয়ে তা বিক্রি করে দেওয়া, নদীপথ রুদ্ধ করা। খাল, বিল, মজে যাওয়া নদীর গতি রুদ্ধ করে চলছে নানা কাজ। এমনকি মজে যাওয়া নদীর উপর পঞ্চায়েত অস্থায়ী রাস্তা বানাচ্ছে – এই দৃষ্টান্তও রাজ্যে বিরল নয়। এর সঙ্গে দুর্নীতির প্রশ্নও জড়িয়ে। খাতায় কলমে হয়তো দেখানো আছে নদীর উপর পাকাপোক্ত সাঁকো হয়েছে। সেই হিসাবে অর্থও বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে হয়ত নদী বুজিয়ে অস্থায়ী রাস্তা হয়েছে। মৃতপ্রায় নদী আরও মজে গেছে, অতিবর্ষণে বন্যা অবশ্যম্ভাবী। অনাবৃষ্টি আর অতিবৃষ্টি – দুটোই এসব অঞ্চলে ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনে। নিম্ন দামোদর উপত্যকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল তাই জলাধার থেকে জল ছাড়লেই বন্যায় ভাসে। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন আর রাজ্য সরকার নিয়মমাফিক তরজায় মাতে। কিন্তু নদী মেরে ফেলে কীভাবে বন্যার পথ প্রশস্ত করা হয় – সেই সত্য আলোচনায় আনা হয় না।
বহুতল নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে মাটির তলার জলস্তর উদ্বেগজনকভাবে নেমে যাচ্ছে। উচ্চফলনশীল চাষের নামে অতিরিক্ত জলের ব্যবহারও বিপদ ডেকে আনছে। মাটি বালি লুঠ, কৃষিজমির চরিত্র বদলে নির্মাণ কাজের এক বেআইনি অর্থনীতি সমান্তরালভাবে রাজ্যজুড়ে বিস্তৃত হচ্ছে। শাসক দল ও প্রশাসনের মদত ছাড়া এটা হতে পারে না। তৃণমূলের আমলে কর্পোরেট কোম্পানি থেকে শুরু করে স্থানীয় মাফিয়া (অধিকাংশই আবার শাসক দলের নেতৃস্থানীয়) সকলেই প্রকৃতি ধ্বংসে মেতেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে কলকাতায় বনভূমি ধ্বংসের ভয়ঙ্কর চিত্র। ২০১১ থেকে ২০২১ – এই দশ বছরে দেশের চার মহানগরের মধ্যে একমাত্র কলকাতাতেই সবুজ কমেছে। চেন্নাই, দিল্লি, মুম্বইতে সবুজের পরিমাণ বেড়েছে। চেন্নাইতে যেখানে সবুজ বেড়েছে ২৬%, সেখানে কলকাতায় কমেছে ৩০%। অস্বাভাবিক উষ্ণতা এবং আর্দ্রতা হ্রাসের কারণ এই তথ্য থেকেই অনেকটা বোঝা যায়।
কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর নির্দেশে চলা উন্নয়নের এটাই চরম পরিণতি। দেশের জল, জমি, জঙ্গল, খনি সমেত সব প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যক্তি মালিকানায় নিয়ে আসা হচ্ছে। কর্পোরেট লুঠের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়ালেই নেমে আসছে রাষ্ট্রের নির্যাতন। কেন্দ্রীয় সরকার কর্পোরেট লুঠের সুযোগ করে দিতে পরিবেশ সংক্রান্ত আইন, বিধি, বনাধিকার আইন সংশোধন করছে। এই রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। বন্দর, খনি, পাহাড় সবেতেই পড়েছে কর্পোরেটের কুদৃষ্টি। তারই সঙ্গে স্থানীয় স্তরে প্রাকৃতিক সম্পদকে কেন্দ্র করে মাফিয়ারাজ। রাজ্যের রাজনীতিও এখন অনেকটাই এসবের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। অতিমারীর সময়ে পরিবেশ রক্ষা, ভাইরাস মোকাবিলায় প্রকৃতি বাঁচানো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি আমরা সেসব ভুলে তথাকথিত উন্নয়নে মেতেছি। প্রত্যক্ষভাবে সকলে না মাতলেও, প্রতিবাদ তো করছি না। উষ্ণতা বাড়লে, গরমে হাঁসফাঁস করলে কয়েকদিন এসব নিয়ে চর্চা করব, তারপর ভুলে যাব। অথচ বিপর্যয় দোরগোড়ায়।
কেন্দ্রীয় সরকার কর্পোরেট লুঠের সুযোগ করে দিতে পরিবেশ সংক্রান্ত আইন, বিধি, বনাধিকার আইন সংশোধন করছে। এই রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। বন্দর, খনি, পাহাড় সবেতেই পড়েছে কর্পোরেটের কুদৃষ্টি।
আগামীদিনে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে চলেছে জল সঙ্কট। সেই সঙ্কটকে কেন্দ্র করে বাড়বে জল নিয়ে ব্যবসা। জলের অধিকারকে কেন্দ্র করে ধনী-গরিবে বৈষম্য সৃষ্টি হবে। পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে সবই পণ্য। সঙ্কট নতুন বাজার তৈরি করে। সবুজ ধ্বংস করে বহুতল বানিয়ে তার মধ্যে আবার কৃত্রিম সবুজায়ন। তা দেখিয়ে বাড়ির দাম বাড়ানো হচ্ছে। জলস্তর যত নামবে, জল যত দূষিত হবে, তত জল নিয়ে ব্যবসা বাড়বে। জল ব্যবসা আবার জলের সঙ্কট আরও বাড়াবে। ভয়ঙ্কর এক দুষ্টচক্র। মানুষের সঙ্কটেই কর্পোরেটের মুনাফা বাড়ে, আর রাষ্ট্র তাদের হয়েই নীতি নির্ধারণ করে।
আশার কথা এটুকুই, যে সঙ্কট যত বাড়ছে, প্রতিরোধও বাড়ছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সরকারি প্রকল্পের বিরুদ্ধে মানুষ প্রতিবাদ করছেন। আদিবাসী, মূলনিবাসীরাও সোচ্চার হচ্ছেন। গ্রামসভা, বনাধিকার আইন নিয়ে তাঁরা সোচ্চার হচ্ছেন। জলাভূমি, নদী, গাছ বাঁচাতে নানা আন্দোলন গড়ে উঠছে। অরাজনৈতিক কিছু হয় না। প্রকৃতি ধ্বংসের অর্থনীতি, রাজনীতি আছে – যা কর্পোরেট স্বার্থে পরিচালিত। তাই পরিবেশ আন্দোলনকেও তার পালটা রাজনৈতিক লড়াইতে নামতে হবে। সেজন্য চাই আরও আরও বেশি মানুষের উদ্যোগ, নাগরিকদের সক্রিয়তা। একমাত্র তাহলেই পুঁজিবাদী এই অর্থনীতি-রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব। মানবসভ্যতার স্বার্থে এই বিশ্বকে জীবজগতের বাসযোগ্য রাখতে সেই রাজনৈতিক অনুশীলন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।
তথ্যসূত্র: বিশ্ব পরিবেশ রক্ষণশীল সমিতি, নদী বাঁচাও – জীবন বাঁচাও প্রভৃতি পরিবেশ আন্দোলনের প্রতিবেদন
মতামত ব্যক্তিগত
নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:
আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
আমাদের ফেসবুক পেজ লাইক করুন।
টুইটারে আমাদের ফলো করুন।
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যোগ দিন।