রাস্তা দখল করে চলেছে এক বিশাল মিছিল। বাম, কংগ্রেস উভয়েরই কর্মী সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ছে। মনোনয়ন জমা দেওয়া, সঙ্গে রোড শো। রাস্তার দু ধারে কর্মব‌্যস্ত নানা পেশার মানুষ। অনেকেই দু চোখে হিসাব করে নিচ্ছেন মিছিলের জমায়েত। কেউ কেউ আবার নিতান্ত অন‌্যমনস্ক বা বীতশ্রদ্ধ। অথচ ওঁরাও ভোট দেবেন। প্রথম মিছিলের রেশ কাটতে না কাটতেই আরেকটি বিশাল মিছিল, গেরুয়া পতাকায় মোড়া। আবার মানুষ ভিড়কে মেপে নিচ্ছেন। তবে এবার একটু অবাক চোখে।

“এত ভিড়?” সহসা প্রশ্ন ছুটে এল পাশের চায়ের দোকান থেকে। উত্তর নেই, বরং আরেকটা প্রশ্ন জুড়ে দিলেন পাশের জন।

নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

 প্রিয় পাঠক,
      আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন

~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।

“লড়াই কি তবে ত্রিমুখী?”

“না। দ্বিমুখী। কংগ্রেস বনাম বিজেপি। তৃণমূল ফ‌্যাক্টর হবে না।”

“শাসক দল ফ‌্যাক্টর নয়?”

“পুরসভা জবরদস্তি করে দখল। জেলা পরিষদও তাই। ঘাসফুল শহরে তো তেমন ফোটেনি কখনোই।”

মিছিল চলে গেলে ঢুকে পড়া গেল একটি হোটেলে। হোটেল মালিক আগমার্কা কংগ্রেসি।

“দাদা, দুটো বড় মিছিল গেল তিনটে দলের। পাল্লা কোন দিকে ঝুঁকছে? কী মনে হচ্ছে?”

“এ বারে পাল্লা ভারি বিজেপির। আমিও ভোট এবার দেব পদ্মফুলেই। গতবার পর্যন্ত ভোট দিয়েছি হাত চিহ্নে। করোনাতে কাজ ছিলনা। কেউ দেখেনি। তাই পরিবর্তন চাই।”

“কিন্তু মুখ‌্যমন্ত্রী তো বিনামূল‌্যে রেশন দিয়েছেন?”

“হ‌্যাঁ, দিয়েছে দিদি। কিন্তু দিদির সেই সময় আর নেই। বদল আসবে। এবারের ভোটে পরিবর্তন হবেই।”

রাস্তার শেষ প্রান্তে দোকান জনৈক মিষ্টি ব্যবসায়ীর। বরাবরের কংগ্রেস ভোটার।

“দাদা রাজনৈতিক পরিস্থিতি কী বুঝছেন?” প্রশ্ন শুনে ফ‌্যাকাশে মুখ।

“লড়াই তো এবার দুটো দলের। হাত আর পদ্মের। হাড্ডাহাড্ডি। একদম স্ট্রেট ব‌্যাটল মনে হচ্ছে। আবার কখনও মনে হচ্ছে পরিস্থিতিটাই বুঝতে পারছি না।”

বিধানসভা কেন্দ্র বহরমপুর। মোট ভোটার ২,৬২,০৭৪ জন। ভোট পরিসংখ‌্যানে চোখ রাখলে সহজেই বোঝা যায় বহরমপুর কংগ্রেসের ঘাঁটি। পরে অধীর চৌধুরীর সাংগঠনিক দক্ষতায় যার পরিচিতি হয় অধীর-গড় হিসাবে। ১৯৫২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত নির্বাচনে লড়ে বহরমপুর আসনে কংগ্রেস জয় ছিনিয়ে নিয়েছে পুরো দশবার। যদিও ২০০৬ সালে কংগ্রেস প্রার্থী মায়ারানী পালের বিরুদ্ধে নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অধীর চৌধুরী সমর্থিত প্রার্থী মনোজ চক্রবর্তী জয়ী হন, পরের বার তিনি লড়েন কংগ্রেসের টিকিটেই। ১৯৯১ সালের আগে ১৯৫২ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত অবশ‌্য বহরমপুর আসন থেকে দুবার জয়লাভ করেন সিপিআই প্রার্থী, তিনবার আরএসপি প্রার্থী। ১৯৯১ থেকে আর শিকে ছেঁড়েনি কারো। একটানা কংগ্রেসি জমানা।

কিন্তু ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বদলাচ্ছে বহরমপুরের সমীকরণও। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ফলাফলের দিকে চোখ রাখলেও যে স্পষ্ট চিত্র ভেসে ওঠে, তা হল গড় রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছিল বহরমপুর আর কান্দির ভোটাররাই। তবে এবারের ভোট চিত্র যেন আগের বছরগুলোর থেকে অনেকটাই আলাদা। কোরোনার প্রকোপ, পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা, জেলার শিল্পহীন অবস্থা, বেকারের সংখ‌্যা বৃদ্ধি — এই ইস‌্যুগুলোর সঙ্গে সঙ্গে শহরের জ্বলন্ত ইস‌্যুগুলো নিয়ে বিধায়ক বিবৃতির ঝড় তুললেও তেমন কোনও বলিষ্ঠ লড়াইয়ে গড়ের নেতাদের দেখেননি বহরমপুরের মানুষ। পাশাপাশি গোটা রাজ‌্যের মতই শহুরে হিন্দু ভোটারের একাংশ দাঁড়িয়েছে বিজেপির পক্ষেই। আরএসএস শাখা ও নানা হিন্দু সংগঠন সামাজিক অনুষ্ঠান ও প্রচারাভিযানের সঙ্গে যুক্ত করতে এবং প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের হিন্দু ভোটারকে। তৃণমূলের লাগামহীন দুর্নীতি এবং প্রশাসনের নানা স্তরে অস্বচ্ছতার কারণে সরকারি চাকুরেদের একাংশও নীরবে মদত দিচ্ছে বিজেপিকেই। নানা কৌশলে নীরব প্রচারও চালাচ্ছে তারা। বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বস্তি এলাকাগুলোতে এর মধ‌্যেই জমি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল এবং কংগ্রেসেরই দাপট বজায় থাকলেও শহুরে ভোটারদের সিংহভাগ দাঁড়িয়েছেন বিজেপির পক্ষেই। সেই নিরীখে বহরমপুর বিধানসভায় কংগ্রেস ও বিজেপির মুখোমুখি লড়াই। সাধারণ মানুষের মতে টক্কর সেয়ানে সেয়ানে। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, গ্রামীণ ভোট ভাগ হবে কংগ্রেস আর তৃণমূলে। শহরের ভোটে শতাংশের বিচারে তৃণমূল তেমন প্রভাব ফেলতে পারবে না। ভোট ভাগ হবে কংগ্রেস আর বিজেপির মধ্যে। বস্তি এলাকার সিংহভাগ ভোট যাবে বিজেপিরই ঝুলিতে, কিছুটা কংগ্রেস আর তৃণমূলে। বহরমপুরে কংগ্রেস আর বিজেপির লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।

অন‌্যান‌্য আসনগুলোর আলোচনায় প্রথমেই আসা যাক ফরাক্কায়। ফরাক্কা আসনে লড়াইয়ের আসরে মূলত তিন প্রার্থী । কংগ্রেস প্রার্থী মইনুল হক, তৃণমূল প্রার্থী মনিরুল ইসলাম এবং বিজেপি প্রার্থী হেমন্ত ঘোষ। ফরাক্কার গাঁ ঘেষা জেলা মালদা। বৈষ্ণবনগরসহ বেশ কিছু এলাকায় বিজেপির সাংগঠনিক প্রভাব রয়েছে। খোদ ফরাক্কাতেও বিজেপির সাংগঠনিক ভিত্তি রয়েছে। তবে সাংগঠনিক দাপট আজও বজায় রাখতে সক্ষম মূলত কংগ্রেস। কংগ্রেস প্রার্থীর ভাবমূর্তিও স্বচ্ছ। ফরাক্কা বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের সংগঠনের ফাঁক-ফোঁকর তার নিখুঁতভাবে জানা। বিরোধীদের সংগঠন সম্পর্কেও ব‌্যুৎপত্তি যথেষ্ট। বুথ স্তরের কর্মী পর্যন্ত তাঁর অবাধ যাতায়াত। মুর্শিদাবাদের সর্বত্র কংগ্রেসি সংগঠনে ধ্বস নামলেও ফরাক্কাতে তেমন প্রভাব পড়েনি। রাজ‌্যের সমীকরণের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই মুসলিম ভোটব‌্যাঙ্কের একাংশ রয়েছে তৃণমূল প্রার্থী মনিরুলের দিকে। তবে শেষ হাসি হয়ত মইনুল হকই হাসবেন।

পরবর্তী আসন সামশেরগঞ্জ। লড়াই অবশ‌্যই দ্বিমুখী। তৃণমূল বনাম সংযুক্ত মোর্চা। কিন্তু এই আসনে জোট জট কাটেনি। কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হক এবং সিপিআই(এম) প্রার্থী মোদাসসর হোসেন দাঁড়িয়েছেন পরস্পরের বিরুদ্ধে। তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলামের গতবার প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৮,৩৮১। সিপিআই(এম) প্রার্থী তোয়াব আলির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৬,৬০১। নির্দল প্রার্থী রেজাউল হক পেয়েছিলেন ৪২,৩৮৯ ভোট। সামশেরগঞ্জ আসনে কংগ্রেস আর সিপিএমের জোটবদ্ধ লড়াই হলে নিশ্চিতভাবেই লাভবান হত সংযুক্ত মোর্চা। কিন্তু জোট জটের কারণেই পাল্লা ভারি তৃণমূলের। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন আমিরুল।

সুতি আসনে লড়াই ত্রিমুখী। কংগ্রেস প্রার্থী হুমায়ুন রেজা, তৃণমূল প্রার্থী ইমানি বিশ্বাস এবং নির্দল প্রার্থী মইদুল ইসলাম। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে সুতি কেন্দ্রে জয়লাভ করেছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী হুমায়ুন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণার অনেক আগে থেকেই সুতিতে মাথা চাড়া দিতে থাকে কংগ্রেসের অভ‌্যন্তরের গোষ্ঠী কোন্দল। সুতির মানুষেরও প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল এলাকার উন্নয়নে ঘাটতি ও বিধায়ককে সারা বছর কাছে না পাওয়ার। অন‌্য দিকে প্রার্থী ঘোষণার পরপরই প্রকাশ‌্যে আসে তৃণমূলের একাংশের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ। দলত‌্যাগ করে কংগ্রেসে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন জেলা পরিষদের খাদ‌্য দপ্তরের কর্মাধ‌্যক্ষ‌ মইদুল ইসলাম। কিন্তু কংগ্রেস তাঁকে টিকিট না দেওয়ায় নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মইদুল। এক্ষেত্রে তৃণমূল প্রার্থী ইমানির বিরোধী গোষ্ঠী এবং কংগ্রেস প্রার্থী হুমায়ুনের বিরোধী গোষ্ঠী পাশে দাঁড়িয়েছে মইদুলের। মইদুলের নিজস্ব ভোটব‌্যাঙ্কও বেশ মজবুত। সুতি বিধানসভায় হুমায়ুন আর ইমানিকে সমানে সমানে টক্কর দেবেন মইদুল, এমনটাই অভিমত রাজনৈতিক মহলের। কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ ভোট জড়ো হবে মইদুলের কাছে, আর তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ ভোট ভাগ হবে মইদুল আর হুমায়ুনে। সেক্ষেত্রে হুমায়ুন কিছুটা এগিয়ে থাকবেন হয়ত। মইদুল দ্বিতীয় স্থান দখল করতে পারেন।

জঙ্গিপুর আসনে লড়াই মূলত দ্বিমুখী হলেও পাল্লা ভারি রাজ‌্যের শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের। জাকিরের বিরুদ্ধে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী আরএসপি-র প্রদীপ নন্দী। এলাকাগত ভাবমূর্তি, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং জনসংযোগে অন‌্য সকলকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছেন জাকির। সাম্প্রতিককালে তাঁর উপর বোমা নিয়ে আক্রমণের ঘটনায় স্বভাবতই উদ্বেগ রয়েছে এলাকাবাসীর। তার জবাব হয়ত তাঁরা ইভিএমে দেবেন।

রঘুনাথগঞ্জ আসনে তৃণমূল প্রার্থী আখরুজ্জামান আর কংগ্রেস প্রার্থী আবুল কাশেম বিশ্বাসের মুখোমুখি লড়াই। ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে আখরুজ্জামান ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী, প্রাপ্ত ভোটের সংখ‌্যা ৭৮,৪৯৭। জয়ী হওয়ার পর তিনি ভিড়েছিলেন শাসক শিবিরে। অন‌্য দিকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের আবুল কাশেম মোল্লা পেয়েছিলেন ৫৬,৭১১ ভোট। রাজনৈতিক মহলের মতে এবারের বিধানসভায় তৃণমূলের নিজস্ব ভোট এবং প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রভাবকে ভিত্তি করে কংগ্রেসি ভোটব‌্যাঙ্ক থেকে কিছুটা ভোট ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হলে লাভবান হবে তৃণমূল শিবিরই।

সাগরদীঘি আসনেও লড়াই ত্রিমুখী। তৃণমূলের সুব্রত সাহা বনাম বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থী মাফুজা খাতুন বনাম সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী সেখ হাসানুজ্জামান (বাপ্পা)। এলাকাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ তেমন সোচ্চার নয়। কিন্তু ‘পরিবর্তন’-এর হাওয়া মাফুজা খাতুনের পালে কিছুটা রয়েছে। অন‌্য দিকে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী হাসানুজ্জামানের আছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে, যদিও তৃণমূল শিবিরের সিংহভাগ রয়েছে সুব্রত সাহার দখলেই। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াইয়ে তিনিই এগিয়ে থাকবেন।

লালগোলা আসনে লড়াই দ্বিমুখী। কংগ্রেস প্রার্থী আবু হেনা বনাম তৃণমূল প্রার্থী মহম্মদ আলি। লালগোলা কংগ্রেসের পুরনো ঘাঁটি। পরিবর্তনের পর কংগ্রেসের সংগঠনে চিড় ধরলেও খুব লাভবান হয়নি তৃণমূল শিবির। অন‌্যদিকে ভূমিপুত্র আবু হেনার প্রতি মানুষের অকুন্ঠ জনসমর্থন আজও অটুট। উন্নয়নের প্রসঙ্গে কিছু অভিযোগ থাকলেও ভোটবাক্সে তার প্রভাব তেমন পড়বে না। বরং মহম্মদ আলিকে নিয়ে তৃণমূলের অভ‌্যন্তরেই রয়েছে “বহিরাগত” অভিযোগ। শত চেষ্টা সত্ত্বেও তা সম্পূর্ণ নির্মূল করা যায়নি। পাশাপাশি ভূমিপুত্র তৃণমূল নেতা টিকিট না পাওয়ার ফলে কিছু তৃণমূল সমর্থক ক্ষুব্ধ। সেইসব ভোট যাবে কংগ্রেসেরই বাক্সে। মিম বা বিজেপির রাজনীতি জনমানসে দাগ কাটতে সক্ষম হয়নি, বরং বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। এটা কিছু বাড়তি সুবিধা দেবে কংগ্রেসকে। সুতরাং আবু হেনার জয়ের সম্ভাবনাই সর্বাধিক।

ভগবানগোলা আসনেও লড়াই তৃণমূল বনাম সংযুক্ত মোর্চা। এই আসনেও তৃণমূল মহলে ক্ষোভ রয়েছে বহিরাগত প্রার্থী নিয়ে। ইদ্রিশ আলি তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার কারণে ভূমিপুত্র সাগির হোসেন ও তৃণমূলের অপর এক নেতা চাঁদ মহম্মদের গোষ্ঠী প্রায় নিষ্ক্রিয়। সংযুক্ত মোর্চার সিপিআই(এম) প্রার্থী কামাল হোসেন অনেক এগিয়ে রয়েছেন প্রচারের নিরিখে। এলাকাবাসীর কাছের মানুষ হিসাবে পরিচিত কামাল হোসেনের জনভিত্তি বেশ দৃঢ়। তিনি লড়াকু নেতা, সমগ্র বিধানসভা কেন্দ্র তাঁর হাতের তালুর মত চেনা। যুব নেতা থাকাকালীন পুরো বিধানসভার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে ফেলে সংগঠন গড়েছেন প্রশংসনীয় ক্ষিপ্রতায়। ২০১৩-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভগবানগোলা আসন থেকে জেলা পরিষদ প্রার্থী হিসাবে জিতেছিলেন রেকর্ড ভোটে। ফলত ভগবানগোলা কেন্দ্রে সার্বিকভাবে এগিয়ে থাকবেন তিনি। এক্ষেত্রে অবশ‌্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কংগ্রেসের ভোটব‌্যাঙ্কেরও। এমনকি কংগ্রেসি ভোটব‌্যাঙ্ক ‘গেম চেঞ্জার’-ও হতে পারে।

রানীনগর আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তৃণমূল বনাম সংযুক্ত মোর্চার। সরাসরি লড়াই তৃণমূল প্রার্থী সৌমিক হোসেন আর কংগ্রেসের ফিরোজা বেগমের। দুই পক্ষই জমি দখলে মরিয়া। কিন্তু এলাকাবাসীর মতে জিতবেন সৌমিক। গত কয়েক বছরে রানীনগর বিধানসভায় তেমন কোন উল্লেখযোগ‌্য কাজ হয়নি বলেই মত স্থানীয়দের। গঙ্গার ভাঙন, বেকার সমস‌্যার সমাধান, স্বাস্থ‌্য ব‌্যবস্থার উন্নতি বা শ্রমিক পরিবারগুলোর দুর্দশা মোচনে তেমনভাবে উদ‌্যোগী হতে দেখা যায়নি কাউকেই। ডোমকলের মতো সৌমিক বিরোধী হাওয়ার প্রবল দাপটও নেই রানীনগরে। বেশকিছু পঞ্চায়েতও রয়েছে সৌমিকদের দখলেই। এলাকায় তাঁর ভাবমূর্তিও অস্বচ্ছ নয়। রানীনগর বিধানসভার মানুষও ভরসা করতে চাইছেন নতুন মুখে। তাই সৌমিকেরই পাল্লা ভারি।

মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্র গোটা জেলার নিরিখে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। চিরকালীন ছকের বাইরে বেরিয়ে এই বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা বিজেপির। মূলত তাদের প্রার্থী গৌরীশঙ্কর ঘোষ আর তৃণমূল প্রার্থী শাওনি সিংহরায়ের লড়াই এই কেন্দ্রে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে জেলার সমস্ত আসনের মধ্যে এই আসনেই সবচেয়ে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এবারের নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র তাই তাদের পাখির চোখ। প্রার্থী ঘোষণার মাস দুয়েক আগে থেকেই মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় সব ভোটার নিশ্চিত ছিলেন প্রার্থী হবেন গৌরীশঙ্কর। সেই মতো ঘুঁটি সাজানোও শুরু হয়ে গিয়েছিল বুথ থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত। এমনকি একদা তৃণমূলের মন্ত্রী এবং মুর্শিদাবাদ জেলার পর্যবেক্ষক, অধুনা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও দল বদলের পর প্রথম রোড শো করেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রেই। তাতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো, কর্মীদের উচ্ছ্বাসও ছিল তীব্র। প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই দিন-রাতের হিসাব না করে গৌরীশঙ্কর পৌঁছে যাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। এক দিকে বিজেপির প্রতিশ্রুতি, অন‌্য দিকে তৃণমূলের দুর্নীতি ফলাও করে বলছেন। তৃণমূল প্রার্থী শাওনির পথ জুড়ে বিছানো রয়েছে গোষ্ঠী কোন্দলের কাঁটা। কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ভোট পর্যন্ত সে নিয়ন্ত্রণ আদৌ বজায় থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। পাশাপাশি তৃণমূলের ভোটব‌্যাঙ্কে থাবা বসাবে কংগ্রেস। ভোট ভাগের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বিজেপির সুবিধা হবে এমনটাই অনুমান।

একসময় সিপিএমের গড় নবগ্রাম বিধানসভাতেও এবারের নির্বাচনে অভিনব লড়াই। সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী কৃপালিনী ঘোষ, বিজেপি প্রার্থী মোহন হালদার এবং একদা সিপিএম অধুনা তৃণমূল কানাই মন্ডলের লড়াই। কানাই মন্ডলের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর নানা রকমের অভিযোগ থাকলেও সাংগঠনিকভাবে নবগ্রামে অনেক এগিয়ে তৃণমূল। সিপিএমের সাংগঠনিক শক্তি আগের চেয়ে দুর্বল হলেও নেহাৎ কম নয়। বরং তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। ভোট মেশিনারির সিংহভাগ কানাইয়ের দখলে। আবার সংগঠন না থাকলেও শাসকবিরোধী সাধারণ ভোটারের ভোট মূলত জড়ো হচ্ছে বিজেপির দিকে। ত্রিমুখী লড়াইয়ে এগিয়ে তৃণমূল, দ্বিতীয় স্থান দখল করতে পারে বিজেপি।

খরগ্রাম ও রেজিনগর আসনেও এগিয়ে তৃণমূলই। ভরতপুরে শাসক, বিরোধী দুই শিবিরেরই জমি দখলের লড়াই। খরগ্রাম কেন্দ্রে আশীষ মার্জিতের বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থীর ভূমিকা তেমন ফ‌্যাক্টর হবে না বলেই অনুমান রাজনৈতিক মহলের। সংযুক্ত মোর্চার ভোট জমা হবে কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে, কিন্তু নিজস্ব সাংগঠনিক দক্ষতায় জেতার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূল প্রার্থীর। ভরতপুর কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তৃণমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবীর আর কংগ্রেস প্রার্থী কমলেশ চ‌্যাটার্জীর। এই কেন্দ্রে হুমায়ুনের কাঁটা ছিল গোষ্ঠী কোন্দল, কিন্তু জেলা নেতৃত্বের তৎপরতায় সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। পাশাপাশি লাগাতার কর্মসূচী এবং জনসংযোগের সাধারণ ভোটারের কাছে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন হুমায়ুন। আবার সংযুক্ত মোর্চার কংগ্রেস প্রার্থী কমলেশেরও ভাবমূর্তি স্বচ্ছ, জনভিত্তি গভীর। আরএসপির মজুত ভোটের সংখ‌্যাও এই কেন্দ্রে বড় ফ‌্যাক্টর। ফলে এই কেন্দ্রে তুল‌্য মূল‌্য লড়াই হবে তৃণমূল আর সংযুক্ত মোর্চার। রেজিনগর কেন্দ্র অলিখিত হুমায়ুন গড়। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে রবিউল আলম চৌধুরী পেয়েছিলেন ৭৯,৭৭০ ভোট, হুমায়ুন নির্দল প্রার্থী হিসাবে পেয়েছিলেন ৭৪,২১০ ভোট। এবারের নির্বাচনে হুমায়ুনের ভোটব‌্যাঙ্ক তৃণমূল প্রার্থীর পক্ষেই যাবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান।

কান্দি আর বড়ঞা যেতে পারে যথাক্রমে সংযুক্ত মোর্চা ও বিজেপির দখলে। কান্দিতে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী বিদায়ী বিধায়ক শফিউল আলম খান, তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব সরকার (ডেভিড)। এলাকাতে দুই প্রার্থীরই সংগঠন বেশ মজবুত। কিন্তু কান্দি শহর বাদে গ্রামীণ এলাকার ভোটে দখল রয়েছে শফিউলেরই। অন্যদিকে হিন্দু ভোটে এবার থাবা বসাবে বিজেপি। কান্দির মুসলমান ভোটের সিংহভাগ যাবে শফিউলের ঝুলিতে, একাংশ যাবে তৃণমূলে। ভাল ফল হওয়ার সম্ভাবনা সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরই। বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী কংগ্রেসের শিলাদিত‌্য হালদার, তৃণমূল প্রার্থী জীবনকৃষ্ণ সাহা এবং বিজেপি প্রার্থী অমিয় কুমার দাস। এই কেন্দ্রে বিদায়ী বিধায়ক প্রতিমা রজককে কংগ্রেস প্রার্থী না করার ফলে ক্ষোভ রয়েছে কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। শিলাদিত‌্য হালদারের বিরুদ্ধে কর্মীদের অভিযোগ তিনি বহিরাগত। এর খেসারত দিতে হতে পারে কংগ্রেসকে। পাশাপাশি তৃণমূলের প্রভাবশালী সাংগঠনিক নেতা বা ব‌্যাপক সংগঠন এই কেন্দ্রে নেই। বিরোধীদের এই দুর্বলতাগুলোই বিজেপির হাতিয়ার। বড়ঞা কেন্দ্রে বিজেপি ও তার শাখা সংগঠনগুলোরও প্রভাব রয়েছে। সাংগঠনিক ভিত্তি খুব মজবুত না হলেও ক্রিয়াকলাপের ধারাবাহিকতা রয়েছে। এগুলোই বিজেপির পালে হাওয়া দিতে পারে।

বেলডাঙা বিধানসভা কেন্দ্র কংগ্রেসের কাছে ‘প্রেস্টিজ ইস‌্যু’। এখানেই জোট তৈরির আলোচনা চলাকালীন প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার আগেই এক জনসভা থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিলেন স্বয়ং অধীর চৌধুরী। সেই ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক হাতিয়ারে শান দিতে থাকেন কংগ্রেস কর্মীরা, শুরু করেন প্রচারাভিযান। এখানে গত বিধানসভা নির্বাচনেও বিদায়ী বিধায়ক সেখ সাফিউজ্জামান নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের গোলাম কিবরিয়াকে ৩০,২৮১ ভোটে পরাস্ত করেছিলেন। এবার সাফিউজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তৃণমূলের হাসানুজ্জামান। দু পক্ষেরই এলাকাতে গভীর জনভিত্তি আছে, দুজনেই তুখোড় সংগঠক। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে দুজনেরই। বিধানসভা কেন্দ্রে পারিবারিক প্রভাবও আছে। পাশাপাশি বিজেপি প্রার্থী সুমিত ঘোষও এক চুল জমি ছাড়তে নারাজ। বেলডাঙা কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হিন্দু মহাসভা ও জনসংঘের জোরালো প্রভাব। এই কেন্দ্রে বিজেপির ভোট কৌশল এবং শেষ অব্দি ভোটপ্রাপ্তি রাজনৈতিক অঙ্কে ‘এক্স ফ‌্যাক্টর’ হিসাবে কাজ করতে পারে বলে রাজনীতির কারবারিদের অনুমান।

হরিহরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে মূল লড়াই তৃণমূলের নিয়ামত শেখ আর কংগ্রেসের আলমগীর হোসেনের। তবে আইএসএফ এখানে প্রার্থী দিতে পারে বলেই জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। নিয়ামতের জনভিত্তি এবং তৃণমূলের সংগঠন এই কেন্দ্রে যথেষ্ট মজবুত। কাজের নিরিখেও এগিয়ে আছেন নিয়ামতই। আইএসএফ প্রার্থী ঘোষণা করেনি এই কেন্দ্রে, তবে করলে মূল টক্কর হবে তৃণমূল আর আইএসএফ এর প্রার্থীর মধ্যেই।

নওদা কংগ্রেস আর তৃণমূল — উভয়েরই ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে এই আসনে জয়লাভ করেছিলেন তৃণমূলের বর্তমান জেলা সভাপতি আবু তাহের খান। পরে তিনি যোগ দেন তৃণমূলে। জেলা পরিষদের বর্তমান জেলা সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মন্ডল (মধু) পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসাবে নওদা আসন থেকেই কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৎকালীন পরিবহনমন্ত্রী ও তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে যোগ দেন তৃণমূলে। পরে আবু তাহেরের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটায় দলীয় কার্যকলাপ থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান মধু। ঘরের ছেলে ঘরের ফেরা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয় নওদার আনাচে কানাচে। তৃণমূল বলে মধু “লস্ট কেস”। কিছুদিন পরে মধু অধীরের উপস্থিতিতে যুব কংগ্রেসের এক সভামঞ্চ থেকে যোগ দেন কংগ্রেসে। সেই মধুই এবার সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী। অন‌্য দিকে তৃণমূল প্রার্থী সাহিনা মমতাজ বেগম। নওদা বিধানসভা সাংসদ আবু তাহেরের লোকসভার অন্তর্গত এবং তাঁর নিজস্ব কেন্দ্র। অন‌্যদিকে সংযুক্ত মোর্চার সমঝোতার পরোয়ানা অগ্রাহ‌্য করে এই আসনে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী। জোট-জটের এ হেন নিদর্শনে স্বভাবতই ধাক্কা খেয়েছেন সাধারণ ভোটার। আবার নেতাদের হাত ধরে যে সব কর্মী সমর্থক গিয়ে ভিড়েছিলেন শাসক শিবিরে, তাঁরা সকলেই নেতার অনুগামী হয়ে ফিরে আসেননি পুরনো দলে। জমি দখলে মরিয়া তৃণমূলও। এক দিকে ক্লাব, খেলা, সমাজসেবা, মিছিলের মধ‌্যে দিয়ে প্রচার সারছেন মধু, অন‌্য দিকে পথসভা, জনসভা, বৈঠকে মাঠ চষে ফেলছেন সাহিনাও। নওদা কংগ্রেসের হাতছাড়া হতেই পারে।

ডোমকলে লড়াই দ্বিমুখী। সংযুক্ত মোর্চার সিপিআই(এম) প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বনাম তৃণমূলের জাফিকুল ইসলাম। এই আসনে সিপিআই(এম)-এর সংগঠন মজবুত। বিদায়ী বিধায়ক আনিসুর রহমান এলাকাবাসীর কাছে ‘অভিভাবক’, ‘কাজের মানুষ, কাছের মানুষ’, ‘ঘরের লোক’ ইত‌্যাদি অভিধায় ভূষিত। আনিসুরের প্রতি মানুষের ভরসাও রীতিমতো ঈর্ষণীয়। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনের স্মৃতি এখনও জাগরূক ডোমকলবাসীর মনে। ভোট লুঠের যোগ‌্য জবাব দেবেন, এমন জানাচ্ছেন অনেক এলাকাবাসীই। অন‌্য দিকে তৃণমূলের দুর্নীতি, স্বজন পোষণের প্রতি ক্ষোভ ব‌্যাপক। প্রার্থী বদল করেও সবটা প্রশমিত করা যায়নি। তৃণমূল প্রার্থী জাফিকুল ইসলামের ডোমকল পুরসভা এলাকায় সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত। কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকায় ততটা জোর নেই। এই কেন্দ্রে জোর লড়াই হলেও হয়ত মোস্তাফিজুর রহমানই শেষ হাসি হাসবেন।

জলঙ্গী কেন্দ্রে লড়াই তৃণমূল বনাম নির্দল। সিপিআই(এম)-এর সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত হলেও প্রার্থী বদল করার কারণে ধ্বস নামে দলের সংগঠনে। কর্মীদের একাংশের মত, তাঁরা নিষ্ক্রিয় থাকবেন। এর ফলে তৃতীয় স্থানে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে সিপিআই(এম)-এর। অন‌্য দিকে তৃণমূলের প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় প্রার্থীর বিপক্ষে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূল কর্মী রাফিকা সুলতানা। পার্টির প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক এবং নির্দল প্রার্থী রাফিকা — দুজনেরই এলাকায় প্রভাব রয়েছে। রাজ্জাকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রাফিকার। তৃণমূল কর্মীদের কাছে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন দলের প্রার্থী, প্রাক্তন সিপিআই(এম) নেতা রাজ্জাক — এমন প্রচারে সহানুভূতি আদায় করে জনভিত্তি বাড়াচ্ছেন তিনি। তবে রাজ্জাক এখনো এগিয়ে।

২০২১ রাজ্য নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের নির্বাচনী চিত্র – ছবি Wikipedia থেকে

নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:

 প্রিয় পাঠক,
      আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.