মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায়

৩০ জানুয়ারি ১৯৪৮। গান্ধীহত্যার ৭৫ বছর হল। এতদিন পরেও একটি প্রশ্নই থেকে গেছে, যা আরও উচ্চকিত হয়ে উঠছে আজ – মহাত্মা গান্ধীকে কি সত্যিই মেরে ফেলা গেল?

একদিন যারা মেরেছিল তাঁরে গিয়ে, আজ তারাই রাজা। এখন তো চারিদিকে সমারোহ, আর কিছুদিন পরেই যেন আবার তৈরি হবে হিন্দুরাষ্ট্র। একদা ইংরেজের হাতে রাজত্ব খোয়ানো পেশোয়া গোষ্ঠী তাদের প্রতিষ্ঠিত সংঘের যথার্থ প্রতিনিধি পেয়ে গেছেন আজকের নরেন্দ্র মোদীকে। তিনি শিবের অবতার, তাঁর কাছে চরাচর নতজানু, বিচারব্যবস্থা প্রায় নিশ্চুপ, মেরুদণ্ডহীন আমলারা ‘জো হুকুম’, সংসদ রাবার স্ট্যাম্পমাত্র আর অর্থ জোগাচ্ছে দেশি কর্পোরেট। তারা আঁতাত করেছে এই দক্ষিণপন্থী মৌলবাদীদের সঙ্গে। স্বাধীন সংবাদমাধ্যম বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। যে কোন প্রতিবাদেরই শেষ অবস্থান চিহ্নিত হয়েছে দেশদ্রোহিতা দিয়ে, নতুন নতুন নামে – ‘আরবান নকশাল’, ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’। এই রাষ্ট্রের মূলে আছে এক অপরিসীম বিদ্বেষের আবর্ত, যার পক্ষে সম্ভব হয়েছে স্ট্যান স্বামীর মত অশীতিপর এক সমাজকর্মীকে মিথ্যা অভিযোগে বন্দী করে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া।

নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

 প্রিয় পাঠক,
      আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন

~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।

এই বিদ্বেষের বিপরীতে কোথাও যেন দাঁড়িয়ে আছেন এক বৃদ্ধ। তাঁকে সরানো যাচ্ছে না। যে মানুষটি সত্যকে ঈশ্বর বলে জেনেছিলেন, তাঁর উপর সবরকম অসত্যের চাদর জড়িয়েও ঢাকা যাচ্ছে না। সেজন্যই এক হত্যাকারীকে বীরের সম্মান দিয়ে তুলে আনতে হচ্ছে। বলা হচ্ছে গান্ধীহত্যা নয়, গান্ধীবধ। যেমন একদা রাবণবধ করেছিলেন রাম।

বাঙালির কাছে গান্ধীর অবস্থান চিরকালই বিতর্কিত। সে তর্কে যাচ্ছি না। কিন্তু আজ দেখা যাচ্ছে, আপামর ভারতবাসীর কাছে বিদ্বেষ জর্জরিত ঘৃণার পরিবেশে গান্ধী আবারও এক আলোকবর্তিকা হয়ে উঠে আসছেন। এবছর ৩০ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত ‘নফরত ছোড়ো যাত্রা’ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছল। বহু মানুষ এই পথে হাঁটলেন আজ।

গান্ধীকে
নফরত ছোড়ো যাত্রার পোস্টার

সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে কাজে লাগিয়ে একটি সম্প্রদায়কে চূড়ান্ত হেনস্থা করার সময়ে গোটা সমাজ যখন ফিসফিসিয়ে উঠছে অপরের দোষ ধরতে, তখন জনগণ পথপরিচায়ক হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন একমাত্র নোয়াখালির গান্ধী। বিগত বছরগুলোতে কৃষক আন্দোলন কিংবা এনআরসিবিরোধী অবস্থান – সমস্ত কিছুতেই সেই অহিংস সত্যাগ্রহেরই আভাস পাওয়া গেছে।

কে এই গান্ধী? যিনি এ দেশের বুকে জনগণের রাজনীতিকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যিনি কথন ও যাপনে কোন বিভেদ রাখেননি, যিনি ধর্মের সাথে সামাজিক দায়িত্বকে জুড়েছেন, যিনি দুটি বিশ্বযুদ্ধ পেরোতে পেরোতে অত্যাচার, হিংসা ও দমনের বিরুদ্ধে অহিংসাকে তুলে ধরেছেন। প্রকৃত স্বনির্ভরতার কথা বলেছেন আর প্রশ্ন তুলেছেন ‘সভ্যের বর্বর লোভ’ নিয়ে, যিনি হারতে হারতেও নিজের নীতি থেকে কখনো সরেননি। পাশ্চাত্য সভ্যতার ফাঁকিটাকে ধরেছেন বহু আগে, বর্জন করতে বলেছেন ভোগবাসনা। যা শেষতম ব্যক্তির জন্য কল্যাণকর, একমাত্র তাকেই শ্রেয় বলেছেন তিনি।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের কল্পনায় ভারত মাতা অবন ঠাকুরের ছবির সম্পূর্ণ বিপরীত। ইনি শস্যশ্যামলা নন, ইনি অস্ত্রধারী সিংহবাহিনী হিন্দুর পরমারাধ্যা অখণ্ড ভারতের অধিষ্ঠাত্রী। ব্রিটিশের হাত থেকে স্বাধীন হওয়ার অর্থ হিন্দুর ধর্ম সংস্থাপন। পেশোয়ারা, অর্থাৎ মারাঠি চিৎপবন ব্রাহ্মণরা একদা ব্রিটিশদের দ্বারা পরাভূত হয়ে রাজদণ্ড হারিয়েছিলেন। সেই ক্ষমতা ফিরে আসবে ব্রাহ্মণের হাতে।

গান্ধীর পূর্বে ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল কংগ্রেসও একইভাবে দেশের শাসন যে একমাত্র অভিজাতদের মাথাব্যথার বিষয়, তাই মেনে চলত। এই অভিজাত ভারতীয় রাজনীতিতে গান্ধীর প্রবেশ চম্পারণ কৃষক আন্দোলনের মাধ্যমে, যেখানে তিনি শুধু নীলকরদের হাত থেকে মুক্তি নয়, অশিক্ষা ও কুসংস্কার থেকে মুক্তির পথ খুঁজেছেন। চম্পারণের অভিজ্ঞতা ব্রিটিশ ভারতের ব্যারিস্টার গান্ধীকে পোশাক বদলাতে বাধ্য করেছে। কথিত আছে চম্পারণে কস্তুরবা দেখেছিলেন, একটি ঝুপড়িতে দুই মহিলার মাত্র একটি কাপড়। একসঙ্গে দুজনে বাইরে বেরোতে পারেন না। এই কাহিনি গান্ধীকে কটিবস্ত্র ধারণে বাধ্য করে, তিনি চরকায় সুতো কেটে বস্ত্রে স্বয়ম্ভরতার কথা ভাবেন। গান্ধীর দুনিয়ায় উকিল ও নাপিত – উভয়ের শ্রমের মর্যাদা সমান।

কায়িক শ্রমে অনীহা যে শ্রেণির, তারা কখনোই এর মর্ম বোঝেনি। আজও যারা চপ মুড়ি শিল্পকে নিয়ে উপহাস করে, সংরক্ষণের বিরুদ্ধে তথাকথিত মেধার কৌলীন্যে রাস্তায় নেমে জুতো পালিশ করে তারাও একই ভাবনার লোক। তর্ক করে, পত্রিকা প্রকাশ করে, সরকারি দপ্তরে চিঠি লিখে যে রাজনীতি চলে, গান্ধী তার সাথে অনেককিছু জুড়ে দিয়েছিলেন।‌ সেবাগ্রামে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলতে এলে জওহরলাল নেহরুকেও ছাগলকে পাতা খাওয়াতে হয়। যে শাসকগোষ্ঠী সেকালের পেশোয়াদের ভক্ত, তাদের “government of the people, by the people, for the people” হজম না হওয়াই স্বাভাবিক।

১৯১৬ সালে কংগ্রেসের লখনৌ অধিবেশনে গান্ধীর কারণে বক্তব্য রাখেন চম্পারণের কৃষক প্রতিনিধি রাজকুমার শুক্লা। সেই প্রথম কৃষকের দুঃখের কথা কৃষক নিজেই বললেন। অন্য এক মন্থন শুরু হল যেন। প্রতিষ্ঠা হল – স্বাধীনতা শুধু উচ্চবর্গের জন্য নয়, স্বাধীনতা কৃষকের জন্য, শ্রমিকের জন্য, একেবারে প্রান্তিক মানুষটির জন্য। ওই বছরেই বেনারস হিন্দু বিদ্যাপীঠে গান্ধীর বিখ্যাত ভাষণে তিনি তীব্র ভাষায় নিন্দা করলেন উপস্থিত স্বর্ণালঙ্কারে ভূষিত রাজাদের। বললেন, এ দেশ স্বাধীন করতে পারেন একমাত্র কৃষক। উকিল, ডাক্তার, জমিদার নয়। সেদিন গান্ধীকে মাঝপথে থামানোর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সম্ভব হয়নি।

গান্ধীকে নিয়ে পরবর্তী সমস্যা তাঁর অস্পৃশ্যতাবিরোধী কাজ। দেবতার চেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ থাকতে গান্ধী বলছেন চর্মকারের মেয়ে বা ভাঙ্গির ছেলে যদি দেশের সর্বোচ্চ পদে যেতে পারে, আমি খুশি হব। নিজের আশ্রমে অস্পৃশ্য দম্পতিকে রেখে তিনি সামাজিক বয়কটের মুখে পড়েছিলেন। নিজের সন্তানদের বলেছিলেন অসবর্ণ বিবাহ না করলে আমি অনুষ্ঠানে থাকব না। ১৯২০ সালের কংগ্রেস অধিবেশন এই কথাটি মেনে নিল যে অস্পৃশ্যতা হিন্দুধর্মের কলঙ্ক। এই অধিবেশনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন হিন্দু মহাসভার ভীষ্ম পিতামহ ডক্টর বালকৃষ্ণ শিবরাম মুঞ্জে। মুঞ্জে এর অনেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধীর আশ্রমে গিয়ে ভারি বিরক্ত হয়েছিলেন, কারণ সেখানে একজন ধর্মে মুসলমান ও মূলে ভাঙ্গি সম্প্রদায়ের মানুষ রান্না করছিলেন। তিনি গান্ধীর বৃহৎ পরিবারের সদস্য।‌ মুঞ্জেরা মুসলমান এবং ভাঙ্গি – কাউকেই মানুষের সম্মান দিতে রাজি নন। হয়ত বা কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তের কারণেই বছর পাঁচেকের মধ্যে ধর্মরক্ষার জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের জন্ম হল।

১৯২০ সালে জাতীয় আন্দোলনের অন্যতম নেতা লোকমান্য তিলক মারা গেলেন। তাঁর মৃত্যুর পর গান্ধী শবদেহে কাঁধ দিতে গেলে তাঁকে বলা হয়, আপনি পারবেন না, আপনি ব্রাহ্মণ নন। গান্ধী বললেন, লোকসেবকের জাত হয় আমি জানি না। শুধু তাই নয়, শওকত আলীকেও টেনে আনলেন কাঁধ দিতে। এই শেষ যাত্রায় তিনি প্রমাণ করলেন তিনি বর্ণ, ধর্ম সকলের সমন্বয় চাইছেন। গান্ধী আলী ভাইদের নিয়ে শান্তিনিকেতনে এলে সেখানেও জাত অনুযায়ী পৃথক পংক্তিতে খাওয়ার নিয়ম উঠে যায়।

এই গান্ধীকে হিন্দুরাষ্ট্রে কেন বাঁচিয়ে রাখা হবে?

কিন্তু মেরে ফেলার উপযুক্ত কারণ চাই । নীতিহীন ভোগসর্বস্ব বন্দে ভারতে গান্ধীর প্রয়োজন নেই – এ কথাটি সরাসরি না বলে, বলা হচ্ছে গান্ধী হলেন হিন্দুবিরোধী, মুসলমানপন্থী এবং ভারত ভাগের জন্য দায়ী পাকিস্তানপ্রেমী। এই বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলতে থাকা মিথ্যা কথাগুলি শেষপর্যন্ত সত্যে পরিণত হয়নি। ১৯৩৪ সালেও গান্ধীকে হত্যার চেষ্টা হয়। তখন পাকিস্তান শব্দটির জন্মই হয়নি, দেশভাগ তো দূরের কথা। কিন্তু গান্ধীকে সরানোর প্রয়োজন হয়েছিল। আজকের ভারতে গান্ধী-সুভাষ, গান্ধী-আম্বেদকর এই জাতীয় বিপরীত সমীকরণগুলিও তেমন ভাবে গেলানো যাচ্ছে না। কেন না এই মহান ব্যক্তিত্বরা শেষদিন পর্যন্ত পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছেন, অবশ্য তা নিয়ে চর্চা তেমন হয় না।

কিন্তু উজ্জ্বল স্মৃতি ভেসে ওঠে যখন দেখা যায় এনআরসিবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাদের হাতে উঠে এসেছে পাশাপাশি গান্ধী ও আম্বেদকরের ছবি। জনপ্রিয় ‘আজাদী’ স্লোগানে ‘গান্ধীওয়ালি আজাদী’ বলা হচ্ছে।

এদেশে আজ নাথুরাম বনাম গান্ধীকে নিয়ে শস্তায় বাজিমাত করার মত সিনেমা তৈরি হচ্ছে – এ আমাদের দুর্ভাগ্য। কিন্তু দেশে দেশে গান্ধীর মূর্তি স্থাপিত হচ্ছে, বহু আন্দোলন নাম না করে সত্যাগ্রহের পথ ধরেছে। পৃথিবীর বহু প্রতিষ্ঠানে পৃথকভাবে গান্ধীর ভাবধারা পড়ানো হচ্ছে। আজও গান্ধীর জীবন নিয়ে নাটক, কাহিনি লেখা হয়েই চলেছে। এক মুঠি লবণ হাতে নিয়ে যিনি সাম্রাজ্য কাঁপাতে পারতেন, তাঁর কাছে আন্দোলনের পাঠ নিতে হয়। সেদিন কংগ্রেসিরাও শুরুতে তাঁর উদ্যোগকে কটাক্ষ করেছিলেন, ইংরেজি সংবাদপত্র হাসাহাসি করেছিল। কিন্তু ২০০ মাইল চলার পর ধনী, দরিদ্র, সাক্ষর, নিরক্ষর, পুরুষ, নারী নির্বিশেষে এই লবণের উপযোগিতার স্বাদ পেয়েছিলেন।

গান্ধীকে কি কোনো একটি ছকে বাঁধা যায়? গান্ধীহত্যার পর হিন্দু মহাসভার সদস্য জনৈক খারে বলেছিলেন, হিন্দুর সর্বনাশ করতে মুসলমান ঔরঙ্গজেব তখন পারেনি, এখন তাই গান্ধী হয়ে এসেছে। আবার জিন্নাপন্থীরা মনে করতেন, গান্ধী মুসলমানদের হিন্দু করে ফেলছেন। আসলে কোনো বিশেষ ধর্মে তাঁকে ফেলা গেল না, কিন্তু ধর্মের বাইরেও রাখা গেল না।

আরো পড়ুন মহাত্মা গান্ধীকে কায়েমি স্বার্থের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া দরকার

গান্ধীর কোনো আশ্রমে কোনো দেবদেবীর মূর্তি নেই, অথচ আছে সর্বধর্ম প্রার্থনার ব্যবস্থা। একদা যেখানে কুরআন শরীফ পাঠ শুরু করার সময় “গান্ধী মুর্দাবাদ” ধ্বনি তুলেছিল হিন্দুত্ববাদীরা। এই গান্ধীকে হত্যা করতেও তারা এসেছে প্রার্থনাসভায়, অন্য কোনো সভা মঞ্চে নয়। গান্ধী সত্যকে ঈশ্বর বলে জেনেছিলেন, তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, সত্য থাকলে গান্ধী থাকেন। অশোকস্তম্ভের নীচে ‘সত্যমেব জয়তে’ লেখা থাকলে গান্ধী থাকবেনই।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন “সত্যকে স্বীকার করতে ভীরুতা দ্বিধা সংশয় আমাদের জাগে। বিনা ক্লেশে যা মানতে পারি তাই মানি, কঠিনটাকে সরিয়ে রেখে দিই এক পাশে। তার সকলের চেয়ে বড় সত্যটাকে মেনে নিতে পারলুম না। এইখানেই তাকে মারলুম। তিনি এসেছেন, ফিরে গেলেন, শেষ পর্যন্ত তাকে নিতে পারলুম না।”

আজ কিন্তু গান্ধীকেই বড় প্রয়োজন ভয়মুক্ত হতে। এই নির্বিবাদে মেনে নেওয়া আপোসকামী সুবিধাভোগী সমাজ আজ সবার জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে। হিংসায় দীর্ণ হয়ে যাচ্ছে সম্প্রীতি, ভালোবাসা। কিন্তু অদ্ভুত এক গা সওয়া প্রতিক্রিয়া সবার। প্রতিবাদ করলে কী ঘটতে পারে সবাই দেখছে। পথে নামতে ভয়! চুয়াল্লিশ বছর বয়সে দক্ষিণ আফ্রিকায় ৫০০০ মানুষের সঙ্গে আট দিনে তিনি ১৬০ মাইল হেঁটেছিলেন গান্ধী, ৬১ বছর বয়সে ২০০ মাইল লবণ আইন ভাঙতে, আর ৭৬ বছর বয়সে নোয়াখালিতে একাকী সেনানী হয়ে ভালোবাসার বীজ বুনেছিলেন। সেই দাঙ্গার আগুনে ঝাঁপ দিতে কিন্তু হিন্দুত্বের প্রবক্তা স্বঘোষিত ‘বীর’ সাভারকর যাননি। আকবর ইলাহাবাদীর উর্দু কবিতায় আছে সন্ত্রস্ত জনগণের কাছে কালেক্টর ছিল স্বয়ং আল্লাহ, সেই জনগণ গান্ধীর অভয়মন্ত্র পাওয়ার পর তিনি লিখেছেন “বুদ্ধুমিঞা ভি হজরতে গান্ধীকে সাথ হ্যায়।”

এই গান্ধীকে হত্যা করা যায় কি?

কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
গান্ধী কিঁউ নহী মরতে – চন্দ্রকান্ত ওয়াংখেড়ে; রাধাকৃষ্ণ প্রকাশন
‘Is India still a Republic or a Monarchy?’ – Satya Sagar; Countercurrents

নিবন্ধকার সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। গান্ধী ভাবনায় অনুপ্রাণিত। লেখালিখি ও সক্রিয়তার বিষয় শিক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, নারীর অধিকার ও ভারতের বহুত্ববাদী স্বরূপ

নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:

 প্রিয় পাঠক,
      আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।