হাচ/ভোডাফোন কোম্পানির মোবাইল পরিষেবার বিজ্ঞাপনে একটি কুকুরকে প্রায়ই দেখা যেত। সে বিশ্বস্তভাবে একটি শিশুর পিছন পিছন চলতে থাকে, শিশুটি যেখানেই যাক না কেন। বিজ্ঞাপনটির শেষের দিকে পর্দায় লেখা হত “Wherever you go, our network follows” (যেখানেই আপনি যাবেন, আমাদের পরিষেবা পাবেন)। স্থান পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল পরিষেবার মানের ওঠানামা (বা বেমালুম “ভ্যানিশ”) হওয়ার অভিজ্ঞতা তখন অনেকেরই। তদুপরি সারমেয় ও মানবশিশুর অনবদ্য জুটি ওই বিজ্ঞাপনকে বেশ জনপ্রিয় করেছিল। এতটাই, যে ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের কোল ঘেঁষা আমারও স্পষ্ট মনে আছে।
এহেন ট্যাগলাইন যদি কিঞ্চিৎ পাল্টে বলা হয়, “Wherever you go, it follows” (যেখানেই যাইবে, সে আশেপাশে থাকিবে), তাহলে গা ছমছমে ভৌতিক ছবির প্রচারে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই গা ছমছমে পরিস্থিতি যদি কল্পনার গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ না থাকে, তাহলে যারপরনাই উদ্বেগ ও মানসিক চাপ অবশ্যম্ভাবী। অনেকটাই এই অবস্থা ভারতে জাতভিত্তিক বৈষম্যের কারণে নাজেহাল নিম্নবর্গীয়দের। দুর্ভাগ্যবশত বর্ণবাদ (casteism) এমন জাল বিস্তার করেছে যে তার ফাঁক গলে বেরোনো তাদের পক্ষে দুঃসাধ্য, এমনকি সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে বিলেত বা মার্কিন দেশে পৌঁছেও। শুনতে আষাঢ়ে গল্প মনে হলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি থেকে শুরু করে বহু প্রতিষ্ঠান, যেখানেই ভারতীয়দের যথেষ্ট সমাগম, সেখানেই বর্ণবাদের ফিসফাস, কানাঘুষো এবং খতিয়ে দেখা সংবাদের রমরমা জানাচ্ছে যে আর এই কলঙ্কজনক “ঐতিহ্য”-কে ধামাচাপা দেওয়া সম্ভব নয়। অবশ্য যারা এহেন বৈষম্যকে পৃথিবীর সমস্ত প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর, তাদের ধামাচাপা দেওয়ার চক্ষুলজ্জা আছে কিনা সেটা কোটি টাকার প্রশ্ন।
নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।
হঠাৎ কেন এই আলোচনা?
অতি সম্প্রতি মার্কিন দেশের ওয়াশিংটন রাজ্যের শহর সিয়াটলের কাউন্সিল জাতপাতজনিত বৈষম্যের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে একটি অর্ডিন্যান্স ঘোষণা করে। এই অর্ডিন্যান্সের পৃষ্ঠপোষক বা স্পনসর সেখানকার প্রগতিশীল সোশালিস্ট কাউন্সিলর শ্রীমতি ক্ষমা সাওয়ান্ত। এই অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, জাতি (race), ধর্ম এবং লিঙ্গ পরিচয়ের মত, এখন থেকে ব্যক্তির জাতও (caste) সুরক্ষিত শ্রেণির তালিকাভুক্ত। এতদ্বারা কর্মসংস্থান, বাসস্থান, জনসাধারণের জন্যে বিশেষ ব্যবস্থা, এবং অন্য যে কোনো ব্যাপারে জাতপাতের ভিত্তিতে বৈষম্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ হল সিয়াটল শহরে। শুধু তাই নয়, সেখানে যদি কেউ জাতের কারণে বৈষম্যের স্বীকার হন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
Historic moment when the vote was finalized and chants of Jai Bhim filled the City Hall. This is the power of "Educate, Agitate and Organize". Thanks @cmkshama for your leadership, @ambedkar_center @indians_seattle @EqualityLabs @akscsfba and others who worked to create history pic.twitter.com/kioauX2bdt
— AANA – Ambedkar Association of North America (@aanausa) February 24, 2023
যদিও আমি আইনজ্ঞ নই বা আইনি ভাষায় পারদর্শিতা নেই, তবু অর্ডিন্যান্সটি একটু খুঁটিয়ে পড়তে দোষ নেই। পড়লে দেখা যাচ্ছে, বলা হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে (ভারতবর্ষ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নাম করে লেখা হয়েছে) এবং তার বাইরে, এমনকি আমেরিকাবাসী দক্ষিণ এশিয় সম্প্রদায়গুলির মধ্যেও বর্ণবাদের প্রকোপ রয়েছে। প্রসঙ্গত বলা হয়েছে, যদিও হিন্দুধর্ম অনুমোদিত বর্ণবাদ জাতভিত্তিক বৈষম্যের প্রধান উৎস, কালক্রমে জাতপাতের বৈষম্য ধর্মীয় পরিচয়কে ছাপিয়ে গেছে এবং এ ধরনের বিভেদ নানা ধর্ম, জাতি ও ভৌগোলিক পরিমণ্ডলে দেখা যাচ্ছে। বহু গবেষক ও মানবাধিকার সংস্থা জানাচ্ছে যে আমেরিকার দক্ষিণ এশিয়া সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রায়, এমনকি তাদের কর্মস্থলেও এই ধরনের বৈষম্যের ক্ষতিকারক দিকগুলি প্রকট। সমস্তই উদাহরণসহ তুলে ধরা হয়েছে সিয়াটলের এই অর্ডিন্যান্সে। যদিও সিয়াটলের কাউন্সিল খুব সম্ভবত আমেরিকার শহরগুলির মধ্যে এই বর্ণবাদী বৈষম্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার ব্যাপারে পথিকৃৎ, এই নথিতে বিভিন্ন মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রমিক সংগঠনের এ বিষয়ে অবস্থান নেওয়ার উদাহরণ রয়েছে। তা থেকে বোঝা যায় যে এরকম পদক্ষেপ মোটেই অভাবনীয় নয়। নজির হিসাবে বলা যায়, ক্যালিফোর্নিয়ার ‘ফেয়ার এমপ্লয়মেন্ট এন্ড হাউসিং’ বিভাগের এক দলিত কর্মচারীর অধিকার রক্ষার্থে সিসকোর (Cisco Systems) বিরুদ্ধে মামলার উল্লেখ আছে। কাজেই এই জাত/বর্ণ বৈষম্য বিষয়ে এখানে অনেকেই অবগত এবং তাকে মোকাবিলা করার প্রচেষ্টাও নতুন নয় মোটেই। যেহেতু সিয়াটলে বহু ভারতীয় বসবাস করেন এবং যেহেতু এই শহর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিকেন্দ্রগুলির অন্যতম, তাই এই শহরের অর্ডিন্যান্সের প্রতীকী ভূমিকাও আছে বৈকি। আশা করি, অন্য শহরগুলি এই নিদর্শন মাথায় রাখবে।
কিছু সংগঠন, যেমন আমেরিকার বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন, কোয়ালিশন অফ হিন্দুজ অফ নর্থ আমেরিকা, হইচই শুরু করেছে এই অর্ডিন্যান্সের প্রতিবাদে। তাদের প্রধান বক্তব্য, এর ফলে অন্যায়ভাবে হিন্দুধর্মকে কলুষিত করে হিন্দুদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আগেই বলেছি যে অর্ডিন্যান্সটি হিন্দুধর্মের উল্লেখ করলেও,পরিষ্কার বলছে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা (এমনকি তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষরাও) সমালোচনার ঊর্দ্ধে একেবারেই নন। তাছাড়া নিম্নবর্ণের মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই জাতভিত্তিক ও জাতিভিত্তিক বৈষম্যের (“both race-based and caste-based discrimination”) যৌথ আক্রমণে বিপন্ন। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দি অ্যাডভান্সমেন্ট অফ কালার্ড পিপলের (NAACP) বর্ণবাদবিরোধী অবস্থানের কথা তাই এই অর্ডিন্যান্সে উল্লেখ করা হয়েছে। সাতাশ পাতার অর্ডিন্যান্সটিকে সবিস্তারে পরিবেশন করা এখানে সম্ভব নয়, তা আমার উদ্দেশ্যও নয়। তার পরিবর্তে দেখে নেওয়া যাক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক কিছু তথ্য ও খবর যেখানে বর্ণবাদ উঠে এসেছে বারবার।
আরো পড়ুন সংরক্ষণের সঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই
লজ্জাজনক, কিন্তু বলতে পারছি না ব্যাপারটি অভাবনীয় বা অবিশ্বাস্য।
প্রথমেই বলে নেওয়া ভাল, বর্ণবাদের প্রকোপ সংক্রান্ত নিয়মিত তথ্য পাওয়া তথাকথিত উন্নত দেশেও দুষ্কর। তার কারণ অনুমান করা খুব কঠিন নয়। বর্ণবৈষম্য (racism) সংক্রান্ত প্রশ্নাবলী ইদানীং দেশব্যাপী বহু সার্ভের অন্তর্গত হলেও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের আভ্যন্তরীণ বৈষম্যের পরিমাপ করতে হলে প্রয়োজন তাদের নিজস্ব উদ্যোগ। এক্ষেত্রে আমার মত উচ্চবর্ণের প্রবাসী ভারতীয়/এশিয় জনসাধারণের হেলদোল নেই। সে যাই হোক, ইকুয়ালিটি ল্যাবস (অর্ডিন্যান্সে তাদেরও উল্লেখ রয়েছে) ২০১৬ সালে একটি সার্ভে করে, সেখানে প্রকাশিত কিছু পরিসংখ্যান এরকম:
•২৫% দলিত উত্তরদাতা কোনো না কোনো বর্ণভিত্তিক মৌখিক বা শারীরিক লাঞ্ছনার স্বীকার হয়েছেন
•প্রতি তিনজনে একজন দলিত ছাত্র/ছাত্রী মার্কিন মুলুকেও শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যের সম্মুখীন
•প্রতি তিনজন দলিতের মধ্যে দুজন কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের সম্মুখীন
•৬০% দলিত উত্তরদাতা বর্ণভিত্তিক অবমাননাকর টিকা টিপ্পনী বা মন্তব্য শুনেছেন
•দলিতদের মধ্যে ৬০% এবং শূদ্রদের মধ্যে ১৪% ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বা উপাসনাস্থলে অনভিপ্রেত বোধ করেছেন “নিম্ন” বর্ণ হওয়ার কারণে
•দলিত ও শূদ্রদের মধ্যে অনেকেই সর্বদা ভয়ে ভয়ে থাকেন এই বুঝি তাঁদের “বর্ণ-পরিচয়” (বিদ্যাসাগরমশাই ক্ষমা করবেন!) সবার গোচরে এসে গেল।
এই সার্ভে থেকে ইকুয়ালিটি ল্যাবস সিদ্ধান্তে আসে যে বর্ণসংশ্লিষ্ট সমস্ত বিভেদ ও অসাম্য সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করেছে এশিয়-মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলিতে, বিশেষ করে যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবাসী জনগোষ্ঠীর তাৎপর্যপূর্ণ উপস্থিতি রয়েছে। রিপোর্টের ১৬ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে “ …all of the inequalities associated with Caste status, ritual purity, and social exclusion have become embedded within all of the major South Asian American institutions. Further, they extend into American mainstream institutions that have significant South Asian immigrant populations. This includes schools, workplaces, places of business, and religious institutions.”
এ তো গেল একটি সার্ভের কথা। বলা বাহুল্য, এরকম অভিজ্ঞতাভিত্তিক তথ্যসংগ্রহের প্রচেষ্টার প্রয়োজন আছে অনেক বেশি মাত্রায় এবং নিয়মিতভাবে। তবে সংবাদ মাধ্যমে বর্ণবাদের নিদর্শন চোখে পড়ে মাঝেমধ্যেই। যেমন, উচ্চশিক্ষিত সুরজ ইয়েংড়ের বর্ণ-পরিচয় তার হার্ভার্ড শিক্ষার থেকে বড় প্রতিপন্ন হয়, ছায়ার মত তাঁকে ধাওয়া করে। ঝাঁ চকচকে বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলির ভিতরের বর্ণবাদী বৈষম্যের খবর এখানকার প্রধান সংবাদমাধ্যমগুলির কাছে আরও প্রকট হয় গত বছর, যখন গুগল থেন্মোঝি সৌন্দর্যরাজনের বর্ণবিদ্বেষ বিষয়ক বক্তৃতা সেখানকার কিছু হিন্দু কর্মীদের আপত্তির কারণে নির্ধারিত তারিখের আগেই হঠাৎ বাতিল করে। পরে কৈফিয়ত দেওয়া হয়, গুগল বর্ণভেদ সমর্থন করে না, কিন্তু থেন্মোঝি বক্তব্য খুবই বিভেদমূলক হতে পারত, ইত্যাদি।
ভাবতে অবাক লাগতে পারে, বর্ণভেদ ভারতভূমি থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে কী করে বজায় রাখা সম্ভব? একটু খতিয়ে দেখলে অবশ্য বোঝা যায়, শুধু সম্ভবই নয়, কিছু ক্ষেত্রে হয়ত নিম্নবর্ণের নিপীড়ন প্রবাসে আরও সহজসাধ্য। প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে, যে মার্কিন দেশের বাসিন্দা ভারতবাসী মোটেই সমস্ত ভারতবাসীর প্রতিনিধিত্ব করে না। গবেষণার ভাষায় বলা যায় “Indian Americans do not comprise a representative sample of all Indians”। নিঃসন্দেহে আর্থিক, সামাজিক, শিক্ষাগত, এবং পেশাগত সুযোগসুবিধার বরপ্রাপ্ত উচ্চবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই পড়াশোনা, চাকরি, বা ব্যবসা সূত্রে এখানে আসার সুযোগ পান বেশি। আবার এইরকম আর্থসামাজিক পরিমণ্ডলে বড় হওয়ার সুযোগ যাদের নেই, সেইসব নিম্নবিত্ত আর নিম্ন-মধ্যবিত্তদের অনেকেই নিম্নবর্ণের হিন্দু বা অহিন্দু। অতএব একথা বলাই যায়, যে সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে যেসব ভারতীয় পাড়ি দেন, তাঁদের অধিকাংশই উচ্চবর্ণের হিন্দু। এহেন বাতাবরণে যে সব কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাক্ষেত্রে ভারতীয়দের সমাগম, সেখানে নিম্নবর্ণের হিন্দুরা সংখ্যালঘুদের মধ্যে আরও সংখ্যালঘু। তাঁরা দেশে থাকলে পাশে দাঁড়ানোর মত যদিও বা কিছু মানুষকে পেতেন, বিদেশে তা হয়ত হওয়ার নয়। ২০২০ সালের একটি সার্ভে জানান দিচ্ছে, ৮০% হিন্দু আমেরিকাবাসী ভারতীয় ‘জেনারেল ক্যাটেগরি’ বা উচ্চবর্ণের।
যাকগে, আমি জানি কোন কোন স্বদেশী সতীর্থ শুভানুধ্যায়ী এসব পড়লে বলবেন, “কেন যে নিজেদের দেশের অন্ধকার দিকগুলো নিয়ে বিদেশে বসে চর্চা করিস? এসবের কারণে ভারতীয়রা আমেরিকানদের কাছে আরও হ্যাটা হয়। আমাদের একজোট থাকতে হবে (পড়ুন, থাকার অভিনয় করতে হবে)।” যাদের মস্তিষ্কের গ্রে ম্যাটার ও হোয়াইট ম্যাটার যত গৈরিক, তারা আনুপাতিকভাবে এসবের মধ্যে তত ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাবেন। মুশকিল হল, আমাদের দেশবাসীর প্রতি প্রেম জেগে ওঠে সময় সুযোগ বুঝে। সত্যি কথা বলতে, আমার নিজেরই মনে হয়েছে বহুবার, যে অন্যান্য দেশের মানুষের সঙ্গে চিন্তাভাবনার আদানপ্রদানে বরং সমৃদ্ধ বোধ করেছি। দেশোয়ালি বন্ধুদের, যাদের অধিকাংশই উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি, তাদের আলাপ আলোচনা ঘুরে ফিরে কিছু চেনা বিষয়ের মধ্যেই ঘোরাফেরা করে। অবশ্যই ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা হয়েছে, কিন্তু আমাকে বারবার বিব্রত করেছে সতীর্থ ভারতীয়দের উগ্র জাতীয়তাবাদ, অতি দক্ষিণপন্থী অবস্থান ইত্যাদি ছোটখাটো বিষয়। ছোটখাটো বলছি, কারণ আমাকে তো আর জাত, বর্ণ, ধর্মজনিত বিদ্রূপ বা আক্রমণ সহ্য করতে হয়নি।
পৃথিবীর এমন কোনো জায়গা আছে কি যা জাত/বর্ণের পরিষেবা সীমার বাইরে?
তথ্যসূত্র
https://www.bbc.com/news/world-asia-india-61241849
https://time.com/6146141/caste-discrimination-us-opposition-grows/
https://berkleycenter.georgetown.edu/events/exposing-caste-discrimination-in-the-united-states
https://www.newyorker.com/news/q-and-a/googles-caste-bias-problem
মতামত ব্যক্তিগত
নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:
আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
আমাদের ফেসবুক পেজ লাইক করুন।
টুইটারে আমাদের ফলো করুন।
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যোগ দিন।