সম্পাদককে দেকচি কদিন বেজায় ব্যস্ত। এই একে ফোন করচে, তো ওই তাকে হোয়াটস্যাপে তৈলমর্দন করচে। শুধোলেম এ কী হে? বল্লে বসন্ত এসে গ্যাচে, তাই নূতনের আবাহন করা হচ্চে। কেমন করে? না এক দল নেতা ফেসবুকে জীর্ণ পুরাতনকে খেদিয়ে দেয়ার ডাক দিচ্চেন, কাল অব্দি গাঁটকাটাদের দাদা বলে ডেকে আজ ভোটের দিনে হুজ্জত করা ভারী অন্যায় বলে বাণী দিচ্চেন। আঠারো হলেই উনিশ হয়, পাবলিককে এম্নি সব শক্ত শক্ত আঁক কষাচ্চেন। সম্পাদকের এদানি বিলক্ষণ চুল পেকেচে, তবে কলপ করে টেরি কেটে বাছুর সেজে দিব্য ঘুরে বেড়ান। তা নূতনের আবাহনে তাঁর পজিশনটি কী? ইয়াব্বড়ো জিভ কেটে বল্লে, আমি সামান্য জার্নালিস্ট। আমার কি পজিশন নিলে চলে? ন্যাকাপনার বহরটি দেকুন। বিলেতে গিয়ে তালি দিয়ে মঙ্গলদীপ জ্বালবার বেলায় পজিশন নিতে আঁতে ঘা লাগেনি, অ্যাকন নিরপেক্ষ সাজচে। হুতোমের গাল খেয়ে বল্লে, আরে ছি ছি। আপনি বুজচেন না। কোতাকার জল কোতায় গড়ায় তার ঠিক কী? অ্যাকন সাপ ও ব্যাঙ উভয়ের মুকে চুমো দেয়াই কর্তব্য। তাই নূতন পালের গোদারও ইন্টারভিউ কচ্ছি, আবার পুরাতন পালের দাদাদেরও তুমি ব্রহ্মা, তুমি বিষ্ণু বলচি।
সম্পাদককে দু নৌকায় ব্যালান্স করে অধিক কষ্ট কত্তে হল না। উইকেন্ডে ভর সন্ধেবেলা মুখ্যসেবিকা নূতনদের গাল টিপে ন্যাশনাল বড়ি গিলিয়ে দিলেন। তেনারা সোনামুখ করে ছেলে বয়সে কালমেঘ খাবার মতন গিলে নিলেন। অমনটি মাসীপিসীরা আমাদের কত খাইয়েচেন। ধেড়ে হয়েচি বলে খাব না এ বা কি কতা? ‘ওয়ান ম্যান ওয়ান পোস্ট’ বলে বাবুরো গোল কচ্ছিলেন। ডেমোক্রেসি, থুড়ি পিসীক্রেসির ঠ্যালায় পোস্টগুলি ভোজবাজির মতন উপে গ্যালো এবং বাবুদের বুজিয়ে দেয়া হল, তোমরা একুনো বয়। ম্যান হতে ঢের দেরি। উওম্যানের পিছে লাগতে এসো না। সেকালে পিসীমাদের খড়মকে আমরা সমঝে চলতেম, একালে হাওয়াই চটিকে তুচ্ছ জ্ঞান কল্লে অদৃষ্টে কী আচে বলা যায় না।
নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।
ডেমোক্রেসির কতায় কালকের মোচ্ছবটির কতা মনে পল্ল। আমাদের কালে বড়মানুষের বাড়ী মোচ্ছব হলে কলকেতার সকল কাঙাল ভোজের গন্ধে গন্ধে এসে হাজির হত। এ মোচ্ছবেও দেকলেম এ তল্লাটের কাঙাল ও তল্লাটে, ও পাড়ার কাঙাল সে পাড়ায় ভোট করে বেড়াচ্চে। ঢেঁকুর তোলার শব্দ দার্জিলিং হতে কাকদ্বীপ পয্যন্ত শোনা যাচ্চে। দু চার বাবু বিবির অন্যের ভরপেট সহ্য হয় না। তেনারা ‘তোমার তো ও পাড়ায় পাত পড়ে, এ পাড়ায় দেকচি কেন’ ইত্যাদি অন্যায্য প্রশ্ন করে মোচ্ছব মাটি করবার ষড় কচ্ছিলেন। তেনাদের ঢাকের মতন চড়াম চড়াম পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েচে। গান বাজনা নইল মোচ্ছব হয় না। তাই স্বর্গবাসী গায়কের ভোটও দেয়া হয়েচে। তেনাকে স্বর্গে ভিডিও কল করে শুধোলেম, কেমন লাগচে? বল্লেন, থাকতে অ্যাওয়ার্ড দিয়েচে, না থাকতে ভোট নিয়ে শোধবোধ হল। তবে এবারের মোচ্ছবে ষোলকলা সম্পূর্ণ হয়নি, কারণ কোনো বাবুর প্যান্ট, কোনো মা জননীর শাড়ী খুলে নেয়া হয়নি। তবু শুনলেম এ মোচ্ছবের খবর পেয়ে উত্তরের ভণ্ড যোগী দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেচে ‘নেহাত লুজ টক করা হয়ে গ্যাচে। রাজ্যটি বঙ্গের মতন হলেই ভালো হয়। চাষাগুলি ভোট দেবে কি দেবে না সে ভয়ে থাকতে হয় না। এদিকে তো কমিশনাদি পকেটে পুরেও শান্তি পাওয়া যাচ্চে না।’
বঙ্গে অ্যাতো রঙ্গ হচ্চে, উপরি হুতোম অতি অলস প্রকৃতি। তাই নকশাটি একানেই সাঙ্গ কত্তে চেয়েছিলেম। সম্পাদক চটে গিয়ে বল্লে, সেটি হবে না। ন্যাশনাল পারস্পেকটিভ চাই। বিবেচনা কল্লেম সেটি বিশেষ শক্ত নয়। দুনিয়ার যত আকাট, নিষ্কর্মা, মিথ্যুক, ভীতু সকলি এ দেশে জড়ো হয়েচে। স্কুলে, কালেজে মা জননীরা কী পরে আসচেন তা নিয়ে মন্ত্রীসান্ত্রীদের ঘুম হচ্চে না। একের পিছে কয়েকশো বানর লেলিয়ে দিচ্চেন। সেগুলির আবার এম্নি সাহসের বহর যে দল পাকাতে না পাল্লে মুখ খোলে না। এদিকে যে বাবু বিবি একলা মেয়েটির ত্রিসীমানায় ছিলেন না, তেনারা গোঁসা কচ্ছেন ‘আল্লার নাম নিলে কেনো? লাল্লার নাম নেয়া উচিত ছিল’। কেউ বা কোন পোশাকটি ভালো, কোনটি মন্দ তা নিয়ে থিসিস লিকচেন। তবে প্রধান সেবকের নামে ধন্য ধন্য কত্তেই হয়। তিনি একেবারে সাধু লোক, এসবের মদ্যেও নিজের পোশাকের একজিবিশনটি চালু রেকেচেন। গীতায় বলেচে দুঃখে যিনি অনুদ্বিগ্নমনা, সুখে যিনি বিগতস্পৃহ ইত্যাদি। স্থূল শরীরে তেমন একটি লোককেও দ্যাকা হয়নি, অ্যাতোদিনে প্রধান সেবককে দেকে চক্ষু সার্থক কল্লেম। তেনারই গবর্নমেন্টের রিপোর্টে কার চাকরি গ্যাচে, কে গলায় দড়ি দিয়েচে সেসব বলা হচ্চে। কিন্তু তিনি লম্বা দাড়ি নেড়ে বলচেন গরীব গুরবোরা সব লাখোপতি হয়ে গ্যাচে। পুরাণে জড়ভরত ভিন্ন আর কারো অ্যামন সিদ্ধির কতা লেকা হয়নি। এনার সিদ্ধির গুণে শীঘ্র দেশসুদ্ধ সকলে সজ্ঞানে স্বর্গারোহণ করবেন। কতিপয় সম্পাদক যুধিষ্ঠিরের কুকুরটির মতন সঙ্গ দেবেন।
নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:
আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
আমাদের ফেসবুক পেজ লাইক করুন।
টুইটারে আমাদের ফলো করুন।
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে যোগ দিন।