কেরালার ভিজহিঞ্জামে আদানিদের বন্দর নির্মাণ নিয়ে ধুন্ধুমার বেধেছে। এর বিরুদ্ধে মৎস্যজীবীদের একরোখা লড়াই চলছে। গত ৫ জুন, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে শুরু হয়েছে মৎস্যজীবী সংগঠনের লাগাতার অনশন। পাশে দাঁড়িয়েছে বহু সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এই লড়াই চালানোর জন্য বেশ কতকগুলি সংগঠন একত্রিত হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে কেরালা স্বতন্ত্র মৎস্যথজিলালি ফেডারেশন, রাষ্ট্রীয় কিষান মহাসঙ্ঘ, সেবা ইউনিয়ন, কোস্টাল ওয়াচ, কোস্টাল স্টুডেন্টস কালচারাল ফোরাম, ওয়েস্টার্ন ঘাটস কনজারভেশন সোসাইটি ইত্যাদি একগুচ্ছ সংগঠন। অন্যদিকে আদানিদের বন্দর নির্মাণের পক্ষে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দল সিপিএম এবং কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। সম্প্রতি তারা একসাথে ‘উন্নয়ন’-এর পক্ষে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি সংগঠিত করেছে। বন্দর বিরোধী মঞ্চের বিপরীতে তারাও যৌথভাবে একটি মঞ্চ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সিপিএম পার্টির এহেন কাণ্ডকারখানায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। তাঁরা বুঝে পাচ্ছেন না, যে বিজেপিকে খাতায় কলমে এক নম্বর শত্রু বলে চিহ্নিত করেছে সিপিএম, কী করে সেই এক নম্বর শত্রুর সঙ্গে যৌথ মঞ্চ গড়ে তুলে আন্দোলন করার কথা ভাবছে? কিন্তু সিপিএম সম্পর্কে যাঁদের সামান্য ধারণা আছে, তাঁরাই জানেন এসব তাদের সহজাত। সিপিএমের ধরনের যে কোনো পার্টিই এমনটাই করে থাকে। তারা মুখে যা বলে, দলিল দস্তাবেজে যা লেখে তা কার্যক্ষেত্রে মেনে চলে না, দৈনন্দিন রাজনীতিতে তা প্রায়শই অনুসরণ করে না। যা মানে এবং অনুসরণ করে তা আবার কখনোই মুখে বলে না, দলিল-টলিলে লেখার তো প্রশ্নই নেই। সুতরাং সরকারি ভাষ্য বা দলিল দেখে তাদের রাজনীতির মূল্যায়ন করা একেবারেই অসম্ভব। একমাত্র কার্যক্ষেত্রের রাজনীতি দিয়েই তাদের বুঝতে হবে।

নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশে দাঁড়ান

 প্রিয় পাঠক,
      আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। স্বাধীন মিডিয়া সজীব গণতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যে কথাগুলো বলা আবশ্যক এবং যে প্রশ্নগুলো তুলতে হবে, তার জন্যে আমরা আমাদের পাঠকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।
নাগরিক ডট নেটে সাবস্ক্রাইব করুন

~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।

সে রাজনীতিতে সিপিএমের ভূমিকা যাঁরা খেয়াল করে দেখেছেন তাঁরাই বুঝবেন, বাস্তবের তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সময় বিজেপির সঙ্গে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা বা জোট গঠনে সিপিএমের কখনোই অসুবিধা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের অভিজ্ঞতা খুব স্পষ্ট করেই এটা আমাদের দেখিয়েছে। কিন্তু ভিজহিঞ্জামের ঘটনা একটা অতিরিক্ত মাত্রা নিয়ে এসেছে। এর আগে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় থাকাকালীন সিপিএম টাটা, সালেম প্রভৃতি শিল্পগোষ্ঠীর প্রকল্পের পক্ষে দাঁড়িয়ে জনগণের প্রতিরোধ সংগ্রামের উপর দমনপীড়ন চালিয়েছিল। কিন্তু সারা ভারতে সম্ভবত এই প্রথম সিপিএম এবং বিজেপি যৌথভাবে আদানিদের কোনো একটি প্রকল্পের পক্ষে দাঁড়িয়ে জনগণের সংগ্রামের বিরুদ্ধাচরণ করছে। শুধু তাই নয়, তারা একটা যৌথ মঞ্চও বানিয়ে ফেলেছে।

কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? দলিল দস্তাবেজে নয়া উদারবাদের তীব্র বিরোধিতা করা সত্ত্বেও কেন সিপিএম সরকারে থাকাকালীন বারবার এমনধারা নয়া উদারবাদী প্রকল্প হাতে নিচ্ছে? আপাতদৃষ্টিতে সিপিএমের এই আচরণের সঙ্গে বুর্জোয়া দলগুলির যথেষ্ট মিল রয়েছে। তারাও সরকারে না থাকলে প্রতিটি (নয়া উদারবাদী) সংস্কারের বিরুদ্ধাচরণ করে। কিন্তু সরকারে এসে সেগুলিকেই লাগু করে। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে, তারা কিন্তু সিপিএমের মত সামগ্রিকভাবে নয়া উদারবাদী নীতিকে কখনোই আক্রমণ করে না। সিপিএমের বৈশিষ্ট্য হল, তারা গোটা নীতিটাকেই আক্রমণ করে, কিন্তু কাজের বেলায় সেই নীতিই প্রয়োগ করে। বুর্জোয়া দলের সঙ্গে এমন একটি দলের পার্থক্যকেই মার্কসিয় পরিভাষায় ‘সংশোধনবাদী’ বলা হয়। সংশোধনবাদকে মুখে (বা লেখায়) মার্কসবাদী সাজতে হয়, ফলে তাকে নয়া উদারবাদের বিরোধিতা করতেই হবে। যদিও কাজের বেলায় তাদের সঙ্গে অন্যান্য বুর্জোয়া দলগুলির কোনো পার্থক্য থাকে না।

কেরালার ভিজহিঞ্জামে গৌতম আদানির বন্দর বানানোর প্রচেষ্টা অনেকদিনের। যখন সিপিএম কেরালায় ক্ষমতায় ছিল না, তখন পিনারাই বিজয়ন তৎকালীন ইউডিএফ মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চ্যান্ডির তীব্র সমালোচনা করেছিলেন আদানিদের সুযোগ দেওয়ার জন্য। বস্তুত, প্রকল্পটি প্রথম থেকেই ছিল কংগ্রেস সরকারের ‘ড্রিম প্রোজেক্ট’। ১৯৯১ সালে প্রথম এই প্রকল্পের ব্যাপারে কথাবার্তা শুরু হয়। তখন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেস নেতা ডি করুনাকরণ। কিন্তু নানা কারণে প্রকল্পের কাজ আটকে থাকে। অবশেষে ২০১১ সালে তৎকালীন ইউডিএফ সরকারের সময়ে চুক্তি সাক্ষরিত হয়। তাতে বলা হয়, এই প্রকল্পে ৬৭% বিনিয়োগ করবে রাজ্য সরকার। কিন্তু পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলের ফলে এতে আসলে উপকৃত হবে আদানি গোষ্ঠী।

সেইসময় বিনিয়োগ ধরা হয়েছিল ৭৫২৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে আদানি গোষ্ঠী দেবে ২৪৫৪ কোটি টাকা, কেন্দ্র দেবে ১৬৩৫ কোটি টাকা আর বাকি ৩৪৩৬ কোটি টাকা দেবে রাজ্য। কিন্তু ২০১৬ সালের মার্চ মাসে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের (ক্যাগ) রিপোর্টে পরিষ্কার দেখানো হয়, রাজ্য সরকারের বিনিয়োগের অনুপাত এবং লভ্যাংশ ফেরত পাওয়ার অনুপাত মিলছে না। ফলে বিপুল রাজস্ব ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ক্যাগ এককথায় এই উপসংহারে পৌঁছয়, যে এই প্রকল্প রাজ্যের স্বার্থবিরোধী। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই রিপোর্টের ব্যাপক প্রভাব পড়ে এবং বিজয়নসহ গোটা সিপিএম নেতৃত্ব এই প্রকল্পকে জনবিরোধী এবং রাজ্যের সাথে চরম বিশ্বাসঘাতকতা বলে আখ্যা দিয়ে তীব্র প্রচার চালান। কিন্তু মজার ব্যাপার, ক্ষমতায় আসার পর থেকে ধীরে ধীরে তাঁদের রূপ বদলে যায় এবং ক্রমশ তাঁরা এই প্রকল্পকে নিজেদের সাধের প্রকল্পে রূপান্তরিত করেন। এখন তো তাঁদের বিজেপির সঙ্গে যৌথ মঞ্চ তৈরি করে প্রকল্প বাস্তবায়িত করার জন্য আন্দোলন করতেও বাধছে না।

কিন্তু কেন বারবার সিপিএমের মত পার্টিগুলি এই ধরণের নয়া উদারবাদী প্রকল্পের হাতে নিজেদের সঁপে দিচ্ছেন একথা জেনেও, যে প্রকল্পগুলি মানুষের স্বার্থবিরোধী এবং সম্পূর্ণভাবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলির স্বার্থে চালিত? এর প্রধান কারণ সিপিএমের শ্রেণিভিত্তির মধ্যে নিহিত। ভিজহিঞ্জাম বন্দর প্রকল্পে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন উপকূল এলাকার মৎস্যজীবীরা। শুধু যে তাঁদের জীবিকা শেষ হয়ে যাবে তা নয়, সমুদ্রতীরবর্তী তাঁদের গ্রামগুলিও বিপন্ন। বন্দর প্রকল্পের কাজের জন্য সমুদ্রতলের ড্রেজিংয়ের ফলে সমুদ্র সাধারণত দ্রুত তীরের বালি টেনে নেয়, ফলে অনেকখানি এলাকা জুড়ে উপকূল ধ্বংস হয়। অন্যদিকে যখন সমুদ্রে পাথর ফেলে ভরাট করা হয় তখন সমুদ্র কোনো না কোনো পাড় ভাঙতে থাকে। সবমিলিয়ে অশান্ত সমুদ্রের রুদ্রমূর্তির কাছে সমুদ্রতীরের মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। এর অবশ্যম্ভাবী ফলাফল হল মৎস্যজীবীদের একটা বড় অংশের জীবন, জীবিকা, সম্পত্তি এবং বাসস্থানের সর্বনাশ।

তবে শহুরে মধ্যবিত্তদের একটা বড় অংশের স্বার্থ এই ধরনের প্রকল্পগুলির সঙ্গে জড়িত। এর আগেও বারবার দেখা গেছে, শহুরে মধ্যবিত্তদের একদম উপরের দিককার একটি ক্ষুদ্র অংশের কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গেও পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার এই ধরণের প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। তাঁরা খুব ভাল করেই একথা জানেন, যে এই ক্ষুদ্র অংশই সমাজের সর্বাপেক্ষা মুখর এবং শিক্ষিত অংশ। ফলে জনমত গঠনে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তাঁরাই শিক্ষক, অধ্যাপক, সাংবাদিক, মূলধারার চলচ্চিত্র নির্মাতা, বহুজাতিক সংস্থার কর্মী এবং পেশাজীবী। শতমুখে এঁরাই সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে মতামত প্রচার করেন এবং জনমত গঠন করেন। রাজারহাটের জমি থেকে উৎখাত হয়ে যাওয়া চাষীদের কণ্ঠস্বর কারোর কাছে পৌঁছয় না। কিন্তু এঁরাই বুদ্ধ ভট্টাচার্যের ব্র‍্যান্ড তৈরিতে এবং প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। সুতরাং সিপিএমের মত পার্টির শ্রেণিভিত্তি এবং সমর্থনভিত্তির মূল স্তম্ভ হওয়ার পক্ষে এঁরাই সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয়। তদুপরি বুর্জোয়াদের স্বার্থের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বুর্জোয়া শ্রেণির এঁরাই হলেন প্রধান যোগসূত্র। কমিউনিস্ট আদর্শ থেকে অধঃপতিত পার্টিগুলির চিরকালের শ্রেণিভিত্তি তাই এঁরাই।

কিন্তু সমস্যার এখানেই শেষ নয়। এর থেকেও গভীরতর সমস্যা কমিউনিস্ট আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।

প্রথমত, দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিগুলি বুর্জোয়া শ্রেণির বিরুদ্ধে তাঁদের আদর্শগত সংগ্রামকে শুধুমাত্র বুর্জোয়া নীতিমালার সমালোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। ফলে সমাজতান্ত্রিক উন্নয়ন-ভাবনার স্বরূপ নিয়ে কোনো সত্যিকারের কাজ তাঁরা কখনোই করেননি। তাঁরা ভেবে নিয়েছেন, ক্ষমতা দখলের পরে এসব নিয়ে ভাবা যাবে।

দ্বিতীয়ত, রাশিয়ার বিপ্লবের পর এবং বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এক শক্তিশালী সমাজতান্ত্রিক শিবিরের আবির্ভাবের ফলে ভারতীয় কমিউনিস্ট দলগুলি যখনই বিকল্প নির্মাণের কথা উঠেছে তখনই চীন কিংবা রাশিয়ার দিকে আঙুল দেখিয়েছে। রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক নির্মাণকার্যের গৌরব গাথা যখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে তখন তাঁরা নিশ্চিন্ত থেকেছেন, আমাদের কাজ অনেক সহজ হয়ে গেছে। শুধু ওই দেশগুলিকে অনুসরণ করলেই চলবে। রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিক নির্মাণকার্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রথম যখন মাও সে তুং প্রশ্ন তোলেন, তখনই গোটা বিশ্বের কমিউনিস্ট মহল নড়েচড়ে বসে। কিন্তু ধীরে ধীরে চীন-রাশিয়া মতান্তর যখন মহাবিতর্কের দিকে গড়িয়ে যায়, তখন সারা বিশ্বের মত ভারতীয় কমিউনিস্টরাও এই দুই আন্তর্জাতিক শিবিরে ভাগ হয়ে যান। তীব্র মেরুকরণের সেই আবহাওয়ায় রাশিয়াপন্থী কমিউনিস্টদের একটা বড় অংশই মাওয়ের কথাগুলিকে গভীরভাবে ভেবে দেখতে সম্মত ছিলেন না।

আরো পড়ুন সিঙ্গুর প্রসঙ্গ: সন্ধিক্ষণের জন্য অপেক্ষা না উদ্যোগ?

তৃতীয়ত, চীনপন্থী কমিউনিস্টরা যত জোর দিয়েছেন মাওয়ের বিপ্লব পূর্ববর্তী কর্মপদ্ধতির উপর, তার এক শতাংশও মাওয়ের গঠনকার্য নিয়ে মাথা ঘামাননি। দক্ষিণপন্থী থেকে অতি বামপন্থী – সব কমিউনিস্ট মনে করে এসেছেন প্রাক-বিপ্লব অবস্থায় নির্মাণকার্য নিয়ে মাথা ঘামানোর অর্থই হল বুর্জোয়া কর্মকাণ্ডের শরিক হয়ে পড়া। তাই তাঁরা এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা থেকে শত হস্ত দূরে থেকেছেন। এর ফল হয়েছে বিষময়। যখনই কমিউনিস্ট দলগুলি সামান্যতম ক্ষমতা হাতে পেয়েছে, তখনই তারা বুর্জোয়া নীতিমালা অনুসরণ করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ বিকল্প নিয়ে কখনো মাথা ঘামানো হয়নি।

সিপিএমের অবশ্য অন্য সমস্যাও আছে। তারা প্রথম থেকেই ভেবে এসেছে এবং মেনে ফেলেছে, যে বুর্জোয়া কাঠামোর মধ্যে রাজ্য সরকার গঠন করলে বুর্জোয়া নীতিই প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকারে যাবার পক্ষে যুক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। সিপিএম বুঝতেই চায় না, যারা বুর্জোয়া নীতি প্রয়োগ করে তাদের নাম যা-ই হোক না কেন, তারা আসলে বুর্জোয়াই। এতে কোনো জটিলতা নেই।

অন্যদিকে নকশালপন্থীদের বড় অংশও মানেন, যে বুর্জোয়া কাঠামোয় ক্ষমতা পেলে বুর্জোয়া নীতি প্রয়োগ করা বাধ্যতামূলক। এখান থেকে তাঁরা যাত্রা করেন সিপিএমের উল্টো দিকে। তাঁরা ঠিক করেছেন, তাঁরা কখনোই বুর্জোয়া কাঠামোয় ক্ষমতায় যাবেন না। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাঁরা বুর্জোয়া বিকাশের বর্তমান পর্যায়ে তাঁদের বিকল্প নীতিমালাকে জনগণের কাছে অনুশীলনের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য করে তুলবেন কীভাবে সে সম্পর্কে তাঁদের কোনো ভাবনাই নেই। সিপিএমের সমস্যা তাঁদের নেই বটে, কিন্তু তাঁদের সমস্যাও কম নয়। মজার ব্যাপার হল, সেই সমস্যা একই তাত্ত্বিক ডামাডোলের উল্টো পিঠ মাত্র। এই দুই চরমের মাঝখানে জনগণের অবস্থা শোচনীয়। ঐতিহাসিকভাবে যারা তাঁদের মুক্তিসংগ্রামের অগ্রদূত, তাদের বিশ্বাসঘাতকতাই এখন তাঁদের ললাটলিখন।

মতামত ব্যক্তিগত

নাগরিকের পক্ষ থেকে আবেদন:

 প্রিয় পাঠক,
      আপনাদের সাহায্য আমাদের বিশেষভাবে প্রয়োজন। নাগরিক ডট নেটের সমস্ত লেখা নিয়মিত পড়তে আমাদের গ্রাহক হোন।
~ ধন্যবাদান্তে টিম নাগরিক।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.